রেজাউল করিম, বৈষ্ণবনগর: বহুদিন পর খুলল স্কুল। কিন্তু অন্যরকম এক ছবি গঙ্গার ভাঙন এলাকায়। কালিয়াচক- ৩ ব্লকের চামাগ্রাম হাই স্কুলে গত দু’মাস থেকে স্কুলেই আশ্রয় নিয়ে আছেন প্রায় শতাধিক গঙ্গার ভাঙন দুর্গত পরিবার। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গতরা থাকার ফলে স্কুলে পঠনপাঠন চালু হয়নি। প্রশাসনকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।
আর দুর্গতদের বক্তব্য, আমাদের ভিটেমাটি সবই তো গঙ্গায়। আমরা সর্বস্ব হারিয়ে এখানে বাধ্য হয়েই আশ্রয় নিয়েছি। সংশ্লিষ্ট ব্লকের বীরনগর -১ গ্রাম পঞ্চায়েতের মুকুন্দটোলা, ঘোষপাড়া ও সরকারটোলার একাংশের কয়েকশো পরিবারের ঘরবাড়ি বিধ্বংসী ভাঙনে গঙ্গায় তলিয়ে যায়। এই ভাঙন দুর্গতরা কেউ আশ্রয় নেন আত্মীয়- পরিজনদের বাড়িতে বা কেউ আশ্রয় নেন অন্যের জমিতে, সেখানেই অস্থায়ী আস্তানা গড়ে তোলেন। তবে বহু ভাঙন দুর্গত পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে আশ্রয় নেন চামাগ্রাম হাইস্কুলে।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ঘর ও অফিসরুম বাদে দ্বিতল ভবনে ১৬টি ক্লাসরুম রয়েছে এবং সব ক্লাসরুমেই ভাঙন দুর্গতরা রয়েছেন। একেকটি ঘরে অন্তত চার থেকে পাঁচটি করে পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। ওই পরিবারগুলি এখনও স্কুলে থাকায় মঙ্গলবার স্কুলের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্লাস চালু করা সম্ভব হয়নি। তবে এদিন যথারীতি সব শিক্ষক-শিক্ষিকা পাশাপাশি হাতে গোনা কিছু ছাত্র ছাত্রী উপস্থিত হয়েছিল।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক শক্তিপদ সরকার বলেন, “নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ৬০০ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে আমাদের স্কুলে। মোট ছাত্র ছাত্রী ১৬০০ জন।কিন্তু গোটা স্কুলভবনে গঙ্গা ভাঙন দুর্গতরা আশ্রয় নিয়ে থাকায় আমরা ক্লাস চালু করতে পারছি না। ভাঙনদুর্গতরা ক্লাসঘরে থাকায় স্কুল ভবনে স্যানিটাইজেশন করাও হয়নি। পুরো বিষয়টি আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। এদিন মাত্র ৩৫ জন ছাত্র ছাত্রী উপস্থিত হন।”
মালদা সদর মহকুমাশাসক সুরেশচন্দ্র রানো বলেন, “ভাঙন দুর্গতরা থাকায় এই মুহূর্তে চামাগ্রাম হাই স্কুলে ক্লাস চালু সম্ভব হয়নি। দুর্গতদের পুনর্বাসনের জন্য চেষ্টা হচ্ছে। স্কুলভবন যাতে ফাঁকা হয় তার চেষ্টা করছি। মোটের ওপর জেলায় সর্বত্রই স্কুলের কাজকর্ম স্বাভাবিক বিধি মেনে শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।