দেবশ্রী মজুমদার, শান্তিনিকেতন: অধ্যাপক মানস মাইতিকে কোন কারণ না দর্শিয়ে চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি তারিখে ফিজিক্সের বিভাগীয় প্রধান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আর সেটা নিয়ে এক দায়ের করা মামলার শুনানির প্রথম দিনে আদালতের ভৎর্সনা বা সমালোচনার মুখে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। আদালতের পর্যবেক্ষণ বিভাগীয় প্রধানকে সরানো হলো কোন কারণ না দর্শিয়েই। প্রেস রিলিজ দিয়ে উপাচার্য সেই শূণ্য স্থান বা ত্রুটি দূর করতে চেয়ে বলেছেন প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে। এই যুক্তি গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় আদালত অধ্যাপক মাইতির বিরুদ্ধে আদালতের অনুমতি ব্যতিত কোন কড়া ব্যবস্থা নিতে নিষেধ করেছে। তবে আদালত বিশ্বভারতীর নিজস্ব শৃংখলা ব্যবস্থার উপর কোন হস্তক্ষেপ করে নি। সেক্ষেত্রে তদন্তের কাজ চলতে কোন বাধা থাকছে না।
অধ্যাপক মাইতির বিরুদ্ধে দমন মূলক ব্যবহারের অভিযোগের সপক্ষে শোনা যাচ্ছে যে, যেহেতু তার আগের দিন ২৬.২.২১ ইংরাজী বিভাগের সব অধ্যাপককে উপাচার্য তাঁর অফিসে ৬ ঘন্টা আটক করে রেখেছিলেন; আচার্য মোদিকে পাঠানোর জন্য কী বয়ানে স্বাক্ষর সংগ্রহ হচ্ছিল তা দেখার জন্য। বয়ানটা মানস মাইতির কাছে ছিল। তাঁকে মেসেজ করে বয়ানটা পাঠাতে বলা হয়। অধ্যাপক মানস মাইতি ও ভিবিইউএফএর ১০ জন অধ্যাপক ঘটনাস্থলে ছুটে যান সহকর্মীদের মুক্ত করতে। যার জেরে পরে সেই ১০ জনই শোকজ পান। যদিও এদিনের শুনানিতে অন্তর্বতী এই আদেশে নিলম্বিত সকল অধ্যাপক আদালতের রক্ষাকবচ পেলেন।
হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা তাঁর অর্ডারে বিশ্ববিদ্যালয়কে ভর্ৎসনা করেছেন কোন কারণ না দর্শিয়ে পক্ষপাতদুষ্টের মত মানসকে বিভাগীয় প্রধান পদ থেকে সরানো এবং ১৩.০৬.২১ র প্রেস রিলিজে মিথ্যাচার করে বলা যে প্রাথমিক তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে তাঁকে বিভাগীয় প্রধান পদ থেকে সরানো হয়েছে। এছাড়াও অধ্যাপকের শোকজের চিঠি ও চার্জশিটে যে সিসিএস (কনডাক্ট) রুল ভাঙার অভিযোগ আছে। সেই প্রসঙ্গে কোর্ট বলেছে সিসিএস (কনডাক্ট) রুল বিশ্বভারতীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কিনা তা অন্য একটি মামলার ( MAT 301 of 2021, CAN1 of 2021; অভিজিৎ সেন বনাম বিশ্বভারতী) বিচারাধীন বিষয়; যার নিষ্পত্তি এখনো হয়নি। সেই মামলার নিষ্পত্তি না করে কোন কর্মী-অধ্যাপককে সিসিএস (কনডাক্ট) রুল ভাঙার অপরাধে অভিযুক্ত করা যাবেনা। বিচারপতির সিসিএস রুল সংক্রান্ত এই বিচারে স্বস্তি বা রক্ষা কবচ পেলেন সুদীপ্ত ভট্টাচার্য, কৌশিক ভট্টাচার্য সহ বহু সাসপেন্ড হওয়া, শোকজ ও চার্জশিট খাওয়া বহু অধ্যাপক কর্মী যারা আন্দোলন করার জন্য, প্রধানমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতি, এমনকি অমর্ত্য সেনকে ইমেল করে সিসিএস (কনডাক্ট) রুল ভাঙায় অভিযুক্ত হয়েছেন।