ইনামুল হক, বসিরহাট: সাতসকালে দুয়ারে দুয়ারে সবজি নিয়ে হাজির সুন্দরবনের লক্ষ্মী। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে ভ্যান রিকশা চালিয়ে বর্ষা, গ্রীষ্ম, শীত ভোর হতেই দুয়ারে হাজির হন সুন্দরবনের লক্ষী দেবী। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের ১৪ নম্বর স্যান্ডেলের বিল এলাকায় ‘লক্ষ্মী দেবী’ নামে পরিচিত এই সংগ্রামী যোদ্ধা। ১৫ বছর বয়স থেকে সংসারের অভাব অনটনের লড়াইয়ে শামিল। অভাবের সংসারে বেঁচে থাকাই ছিল মূলমন্ত্র। পড়াশোনায় ইতি টেনে সংসারের হাল ধরেছিল অসুস্থ বাবা মায়ের পাশে দাঁড়াতে। তাই জলে জঙ্গলের লড়াই করে বেঁচে থাকা অন্য পাঁচজনের মতো অন্যকাজ কর্মের মধ্যে জীবন সংগ্রামের লড়াই না করে একেবারে একটি ভ্যান রিক্সা নিয়ে বিভিন্ন রকমের সবজি সাজিয়ে ঘরের দুয়ারে পৌঁছে যেত লক্ষী। কালিন্দী নদীর পারে দুয়ারে দুয়ারে হাজির হতো বিভিন্ন স্বাদের সবজি ফসল নিয়ে। শীতকালে যেমন আলু, ফুলকপি, বিট, গাজর, বরবটি, বিট কাঁচালঙ্কা কেনার জন্য ঘর থেকে বেরিয়ে আসে এলাকাবাসী। দুই মেয়ে, এক ছেলেকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে আজ লক্ষ্মী হয়ে উঠেছে সুন্দরবনের ঘরের লক্ষী। একদিকে তাদের পড়াশুনার খরচ জোগাড়, অন্যদিকে স্বামীর পাশে দাঁড়িয়ে সংসার চালাচ্ছেন। তাই সকাল হতেই লক্ষ্মীর সবজি কিনতে ভিড় জমানন সুন্দরবন পাড়ের প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ। জৈবসারে তৈরি হরেক রকমের সবজি মিলবে লক্ষী দেবীর কাছে। নিজেই চাষ করে ফসল ফলিয়ে কম দামে জঙ্গল পারের মানুষকে সবজি খাইয়ে লক্ষ্মী হয়ে উঠেছেন সত্যিকারের ‘লক্ষ্মী দেবী’।