পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ১২দিন ধরে উত্তরকাশীর সিল্কইয়ারা টানেলে আটকে রয়েছেন ৪১জন শ্রমিক। জোর জল্পনা ছিল, উদ্ধারকাজ শেষ হতে বৃহস্পতিবার গভীর রাত বা তা গড়িয়ে শুক্রবারও হতে পারে। যদিও রাত পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা যাচ্ছে, উদ্ধারকাজ একেবারে অন্তিম পর্যায়ে। টানেলে পাইপ বসানোর কাজ হয়ে গিয়েছে। সেই পাইপ দিয়ে ট্রলি পাঠানো হয় শ্রমিকদের উদ্ধার করার জন্য। ওই ট্রলিতে করে শুইয়ে বাইরে বের হবেন শ্রমিকরা।
উদ্ধারকাজে সরেজমিনে নজর রাখতে বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে পৌঁছান ভারতীয় সেনার প্রাক্তন জেনারেল ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভি কে সিং। তিনি ও কয়েকজন সিনিয়র অফিসার টানেলে প্রবেশ করেন। সুড়ঙ্গের সামনে অস্থায়ী ক্যাম্প করে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি। ধ্বংসস্তূপ কেটে সুড়ঙ্গের ৪৪ মিটার গভীর পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে ড্রিল মেশিন। আর মাত্র ১০ মিটার বাকি।
অগার মেশিন ঘণ্টায় ৪-৫ মিটার গতিতে খননকাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর প্রধান। সুড়ঙ্গের ভিতরে বসেছে পাইপ। সেই পাইপ দিয়েই ট্রলিতে করে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছানোর কথা উদ্ধারকারী দলের সদস্যদের। তারপর সেই ট্রলিতে করে বের হয়ে আসবেন শ্রমিকরা।
জানা গিয়েছে, এনডিআরএফের ১৫জন জওয়ান সুড়ঙ্গে প্রবেশ করেন। উদ্ধারকারী জওয়ানরা সুড়ঙ্গের অনেক গভীরে চলে যাওয়ায় ওই ৪১ শ্রমিকের পাশাপাশি তাঁদের জীবনও ঝুঁকির মুখে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করতে দেখা যায় এনডিআরএফের (জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী)-এর প্রধান তথা লেফটেন্যান্ট জেনারেল সঈদ আতা হাসনাইনকে। তবে, এদিনও উদ্ধারকাজে মাঝেমধ্যে বাধা পেতে হয়।
এদিন সন্ধ্যার মধ্যেই উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হবে বলে প্রথমে আশা করেছিলেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা। কিন্তু, অগার মেশিনে চাপ আসায়û দ্রুত গতিতে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ধীরে চলতে চাইছেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা। ধ্বংসস্তূপ কেটে সরাতে দিল্লি থেকে ৭ জনের বিশেষজ্ঞ দল এসেছে। এই ধ্বংসস্তূপের জন্য অগার মেশিনের কাজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। সেগুলি সরিয়ে ফেলে ফের অগার মেশিন কাজ শুরু করে। যে স্টিলের গার্ডারে ধাক্কা লেগে বুধবার রাতে কাজ বন্ধ হয়েছিল, ইতিমধ্যেই কেটে সরানো হয়েছে সেই গার্ডার। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের আধিকারিকর ভাস্কর খুলবে জানান, খননকাজে বাধা তৈরি করেছিল অনেকগুলি মোটা লোহার রড।
সেগুলিকে কেটে ফেলা সম্ভব হয়েছে। সেগুলি কাটতেই ১২-১৪ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। বৃহস্পতিবার রাতে জানা যায়, আটক শ্রমিকদের কাছে পৌঁছাতে আর মাত্র ১০মিটার পথ বাকি। সেই পথ খনন করে এগিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকারী দলের জওয়ানরা। পাতা হচ্ছে পাইপও। এদিকে, সুড়ঙ্গের বাইরে তৈরি রাখা হয়েছে ৪১টি অ্যাম্বুল্যান্স। উদ্ধার হওয়ার সঙ্গেসঙ্গেও শ্রমিকদের তাতে করে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে তাঁদের জন্য ৪১টি বেড খালি রাখা হয়েছে।