পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশ থেকে একটি বার্তা দেওয়া হল বিশ্বের হালাল পণ্যের বাজারে। কোনও পণ্যের হালাল সার্টিফিকেট দেওয়া নাকি হবে বেআইনি। হালাল পণ্য বিক্রিতেও নিষেধাজ্ঞা আনতে চলছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। ইতিমধ্যেই লখনউতে হযরতগঞ্জ থানায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে, একজন হালাল সার্টিফিকেট দাতার বিরুদ্ধে। জমিয়তে উলামা হিন্দ হালাল ট্রাস্ট, হালাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া, হালাল ইন্ডিয়া (চেন্নাই)-সহ বেশ কয়েকটি সংস্থা রয়েছে যারা হালাল সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে। ইসলামী শরীয়াহ দৃষ্টিভঙ্গিতে এই পণ্য তৈরি কি না এবং এতে ইসলামে নিষিদ্ধ শূকরের রক্ত, মাংস, চর্বি, চামড়া বা মদ ও মাদক জাতীয় উপাদান আছে কি না, সেটা বিশেষভাবে খোঁজ নিয়ে সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে এই সংস্থা।
বিশেষ করে বিদেশের বাজারে পাঠানোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন রফতানিকারক সংস্থা এই সার্টিফিকেট নিতে চায় মুসলিম খরিদ্দারদের আকৃষ্ট করার জন্য। আমেরিকায় এখন প্রায় ৫০ লক্ষ মুসলিম বাস করেন। সেখানে এই হালাল সার্টিফিকেটের চাহিদা অনেক বেশি।
এছাড়া ভারত থেকে মুসলিম দেশে মাংস বা মাংসজাত পণ্য, কেক, প্যাটিস ও বেকারি পণ্য, সাবান ও প্রসাধনীতে হারাম জিনিসের ব্যবহার হচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চায় রফতানিকারক সংস্থা। তাদের পণ্যে উল্লেখ করাও থাকে এই পণ্য হালাল সার্টিফিকেট প্রাপ্ত।
ইদানিং ভারতের বাজারে এবং বিভিন্ন শপিং মলেও হালাল পণ্যের চাহিদা তুঙ্গে। মুসলিম খরিদ্দাররা নিশ্চিন্ত মনে এই সব খাদ্য বা পণ্য খরিদ করছেন। এখন উত্তরপ্রদেশ সরকার এই সার্টিফিকেট দেওয়ার প্রক্রিয়াকেই নিষিদ্ধ ও বেআইনি ঘোষণা করতে চলেছেন।
জানা যাচ্ছে, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এই বিষয়টিতে নাকি উদ্বিগ্ন। এক বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য এই ধরনের ব্যবস্থা কেন থাকবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। সরকারি পর্যায়ে হালাল প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর সেই মোতাবেক শুরু হয়েছে এফআইআর।
হালাল পণ্যের সার্টিফিকেটের ক্ষেত্রে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দকে বেশি বিশ্বাসযোগ্য মনে করে বিদেশের আমদানিকারী সংস্থাগুলি। জমিয়তের পাশাপাশি অন্যান্য বেশ কয়েকটি সংস্থা এই দায়িত্ব পালন করে চলেছে।
হযরতগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর বিক্রম সিংহ জানিয়েছেন, এফআইআর হওয়ার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। কিছু লোক নিজেদের পণ্যের বিক্রি বাড়ানোর জন্য এই ধরনের হালাল হারাম ধারণা ছড়াচ্ছে কি না, সেটাও খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে ভারতীয় রেলে মাংস পরিবেশন নিয়ে সারা দেশে প্রশ্ন উঠেছিল ভারতীয় রেলে পরে হালাল মাংস পরিবেশনের ব্যবস্থা হয়েছিল। কিন্তু বিজেপি জমানায় হারাম–হালাল ইস্যুতে জোর বিতর্ক শুরু হয়। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে কোথাও কোথাও হালাল সাইনবোর্ড খুলে ফেলতে বাধ্য করা হয়।