পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশ গোয়ার পর ‘হালাল’ সার্টিফায়েড পণ্য বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞার দাবি উঠল বিহারে। কোনো ছোটোখাটো বিজেপি নেতা নন, হালাল বলে উল্লেখ করা পণ্যের বিরুদ্ধে আপত্তি তুলেছেন মোদি সরকারের গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিং।
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারকে লিখিত চিঠিতে মন্ত্রী লিখেছেন ‘হালাল সার্টিফায়েড’ লেখা পণ্য বিক্রি নিষিদ্ধ করতে হবে । তাঁর বক্তব্য, এই ধরণের সংশাপত্র বেআইনি। হালাল লেখা পণ্য বিক্রি বন্ধ করুন। তার দাবি, ভারতের মত দেশে হালাল শংসাপত্র উল্লেখ করা আসলে গণতন্ত্রের জন্য বিশ্বাসঘাতকতা।
ইতিমধ্যেই যোগী আদিত্যনাথের সরকার হালাল সার্টিফায়েড লেখা পণ্য বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে। লখনউয়ের হজরতগঞ্জ থানায় দায়ের হওয়া একটি এফআইআরকে হাতিয়ার করে বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকার নড়েচড়ে বসে। থানায় অভিযোগ করা হয়, বেশ কিছু খাদ্যপণ্য বাজারে বিক্রি হচ্ছে যেগুলিতে হালাল সার্টিফিকেটের উল্লেখ রয়েছে। এইভাবে মানুষের বিশ্বাসকে পণ্য বিক্রির উদ্দেশে ব্যবহার করা হচ্ছে। বাস্তবে হালাল সার্টিফিকেটের কোনও সরকারি স্বীকৃতি নেই।
গিরিরাজের এমন চিঠি প্রসঙ্গে নীতীশের দলের এক নেতা বলেন, গিরিরাজ সিং মেরুকরণের অঙ্ক মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। হালাল সার্টিফায়েড অনুমোদিত পণ্য মানুষ কিনবে কী কিনবে না সেটা ক্রেতার ইচ্ছা-অনিচ্ছার বিষয়।
হালাল আরবি শব্দ। এর অর্থ বৈধ। এর বিপরীত শব্দ হল হারাম। হালাল শব্দটির বহুল ব্যবহার শোনা যায় পশু জবাইয়ের পদ্ধতি হিসাবে। যদিও সার্বিক ভাবে এর অর্থ ব্যাপক। তা কেবল পশু জবাইয়ের পদ্ধতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। অনেক ধর্মেরই পশু জবাইয়ের নিজস্ব বিধি আছে। হিন্দু এবং শিখরা পশু বলির যে পদ্ধতি অনুসরণ করেন তাকে বলে ঝটকা। অনেকেই মনে করছেন, হালাল নিয়ে আপত্তি তুলে বিজেপির মেরুকরণের অস্ত্রতে শান দিতে চাইছে। লোকসভা ভোটের আগে হিন্দু ভোটকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যেই তারা এই কাণ্ড করছে। সেই কারণেই শুধুমাত্র একটি এফআইআরকে হাতিয়ার করে যোগী আদিত্যনাথের সরকার হালাল সার্টিফায়েড পণ্য বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
ভারতে হালাল ইন্ডিয়া নামে একটি প্রতিষ্ঠান বহু বছর ধরে কাজ করছে এবং তারা সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে। এই প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেটে মান্যতা দেয় কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, মালয়েশিয়া-সহ বহু দেশ। তা থেকে ভারত বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করে। তারপরও কেবল ভোটের কথা মাথায় রেখে ইস্যু বানাচ্ছে বিজেপি। অভিযোগ বিরোধীদের।