পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ ইউক্রেনে যুদ্ধ আজ সপ্তম দিনে পড়ল। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভিযানের ঘোষণার পর থেকেই শুরু হয় যুদ্ধ। সেই থেকেই চলছে গোলাবর্ষণ।
ইতিমধ্যে কয়েকটি শহরের দখল নেওয়ার দাবি করেছে রাশিয়া। আবার কিছু শহরে দুই পক্ষের মধ্য লড়াই চলছে। খারকিভ শহরে মর্টার শেল হামলা ও বিমান হামলা অব্যাহত আছে।
বিশ্লেষকদের ধারণা, এখন বিমান হামলা চালালেও বুধ কিংবা বৃহস্পতিবার নতুন করে স্থল অভিযান শুরু করতে পারে রাশিয়া। দক্ষিণ অংশে ইতিমধ্যে খারসন শহর দখলে নেওয়ার দাবি করেছে রাশিয়া। এর মধ্য দিয়ে ওডেসা ও মিকোলাইভ শহরে নতুন করে অভিযান শুরু করার মতো পথ তৈরি হতে পারে। আর তাতে ইউক্রেনের বন্দরব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে ইউক্রেনের পূর্ব দিক থেকে মারিওপোল শহর ঘিরে ফেলার জন্যও প্রস্তুত হচ্ছে রুশ সেনারা। এর মধ্য দিয়ে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ড ও ক্রিমিয়ার মধ্যে অবাধে চলাচল করতে পারবেন রুশ সেনারা।
এদিকে এই অবস্থায় বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ইউক্রেনে রাশিয়ার এই অভিযানে ৫০ লাখ ইউক্রেনীয় বাস্তুচ্যুত হবে। এ পরিস্থিতিতে বিশ্বের অনেক দেশ ইউক্রেনের শরণার্থীর জন্য সীমানা উন্মুক্ত করে দিয়েছে। বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলো ব্যাপকহারে শরণার্থী গ্রহণ করছে। এ সপ্তাহে জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফিসার বলেছেন, ইইউর সব সদস্য ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের নেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
অনেক দেশ ইউক্রেনীয়দের জন্য তাদের বৈদেশিক নীতি ও ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করেছে।
যে দেশগুলি এক্ষেত্রের অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে, তা হল পোল্যান্ড, রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, আয়ারল্যান্ড, মলদোভা, যুক্তরাজ্য।
ইউক্রেনীয়দের জন্য যুক্তরাজ্যও কিছু বিধিনিষেধ শিথিল করেছে। ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে থাকা যে কোনও আত্মীয়ের এসে থাকার সুযোগ পাবে ইউক্রেনীয়রা। তবে যাদের আত্মীয় নেই, তারা এই সুবিধা পাবেন না। এই অবস্থার মধ্যে পোলান্ডে-ই সবচেয়ে বেশি শরণার্থী গ্রহণ করা হয়েছে। পোলান্ড সরকার জানিয়েছে, ইউক্রেন থেকে পোলান্ডে যে কেউ প্রবেশ করতে পারবে। লাগবে না কোনও পাসপোর্ট-ভিসা। রোমানিয়ায় দেশে প্রবেশ সহজ করেছে।
কেবল বায়োমেট্রিক পদ্ধতি অথবা সাধারণ পাসপোর্টে ইউক্রনীয়রা রোমানিয়ায় ঢুকতে পারবে। এছাড়াও আইডি কার্ড ও জন্ম নিবন্ধণ কার্ড দেখিয়েও রোমানিয়ায় প্রবেশ করা যাবে। এ ছাড়া মানবিক কারণে কোনও প্রকার কাগজপত্র ও নথি ছাড়াও দেশটি ইউক্রেনের নাগরিকদের নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ইউক্রেনের বৈধ সব নাগরিককে স্বাগত জানিয়েছে হাঙ্গেরিও।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী ভিকটর ওরবান বলে, আমরা দেখছি অনেকই অভিবাসনের প্রমাণাদি ছাড়া হাঙ্গেরিতে আসছে, আমরাই তাদেরকে কাগজপত্র সরবরাহ করছি। এ ছাড়া তৃতীয় কোনও দেশ থেকে ইউক্রেনীয়রা এলেও তাদের গ্রহণ করা হচ্ছে। ২৫ ফেব্রুয়ারি আয়ারল্যান্ড ইউক্রেনীয়দের জন্য তাদের ভিসা তুলে নেয়। আইরিশ বিচার মন্ত্রণালয় জানায়, ইউক্রেনের বর্তমান অবস্থান যে কেউ আয়ারল্যান্ডে প্রবেশ করতে পারবে, সেক্ষেত্রে ভিসা ছাড়াও তাদের প্রবেশাধিকার বৈধ বলেই বিবেচিত হবে। মলদোভা সরকারও ইউক্রেনের নাগরিকদের বিনা পাসপোর্টে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। কেবল জাতীয় পরিচয়পত্র দেখাতে পারলে এই সুযোগ মিলবে।
অস্থায়ীভাবে শরণার্থী প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে স্লোভাকিয়াও। ইউক্রেনের নাগরিকদের ৯০ দিনের জন্য আশ্রয়ের সুযোগ মিলবে।