পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : হিজাব নিয়ে অপপ্রচার,কুৎসা বহুদিনের।সম্প্রতি কর্নাটকে তা মারাত্মক আকার নেয়। হিজাবকে বারবার ধর্মান্ধতার প্রতীক হিসাবে দেখানো হয়েছে। এবার সেই হিজাবের আশ্রয়েই প্রাণ বাঁচলো বিতস্তার।হিজাব পরেই যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেণ বর্ডার পার করেছে হুগলির উত্তরপাড়ার শখেরবাজারের বিতস্তা গুপ্তা।সম্প্রতি রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্ট থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার উড়ানে দিল্লি এসে পৌঁছেন তিনি।সেখান থেকে ফেরেন কলকাতায়। সেখান থেকে হুগলির উত্তরপাড়ার উদ্দেশে রওনা দেন বিতস্তা গুপ্তা।চোখের সামনে মুহূর্মুহু বোমা পড়ছিল।খাওয়া-দাওয়া জুটছিল না। বাড়িতে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। স্নো-ফলসে দাঁড়িয়ে রাত কাটাতে হয়েছিল।শেষ পর্যন্ত মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র ছাত্ররা হিজাব পরিয়ে সীমানা পার করিয়েছেন বিতস্তাকে।
হিজাবের সঙ্গে শালীনতার সম্পর্ক।ধর্মান্ধতার নয়। তবুও বার বার হিজাবকে মৌলবাদীরা অঙ্গ বানানো হয়েছে সযত্নে, সুকৌশলে। পশ্চিমা মিডিয়ার সৌজন্য হিজাব সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে গোটা বিশ্বে।
বিতস্তার বাবা দেবাশিস গুপ্তা বলেন, ‘মেয়ে জানিয়েছে পাকিস্তানের পড়ুয়া তাঁকে হিজাব পরিয়ে ইউক্রেন সীমানা পার করিয়েছে। ওই ছাত্ররা বিতস্তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ বর্ষের ছাত্র।’ এই ঘটনায় আপ্লুত দেবাশিসবাবু। ‘রেমানিয়া সীমান্ত থেকে ১১ ঘন্টা বাস জার্নি করে বুখারেস্ট পৌঁছন বিতস্তা। রাত দুটো নাগাদ তিনি ক্যাম্পে ঢোকে। তারপরের দিন এয়ারপোর্টে গিয়ে উরানের টিকিট পায়।’
রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে ইতিমধ্যেই ৩০০০ পড়ুয়াকে উদ্ধার করে দেশে ফেরানো হয়েছে। কিন্তু, এখনও অনেক পড়ুয়া ইউক্রেনের খারকিভ, সুমিসহ বিভিন্ন শহরে আটকে রয়েছেন। একদিকে, যেমন দেশে ফেরায় খুশি তাদের পরিবার তেমনি অনেক পড়ুয়ার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় দুশ্চিন্তায় তাদের পরিবার। যে সমস্ত ভারতীয়রা ইউক্রেনে আটকে ছিলেন বা রয়েছেন তাদের সিংহভাগই হলেন ডাক্তারি পড়ুয়া। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে অধিকাংশ পড়ুয়া মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে দেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন। এখন প্রশ্ন উঠছে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখল দেশের মেডিকেল পেশা সংক্রান্ত বৃহত্তম সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন ।
চূড়ান্ত বর্ষের পড়ুয়াদের অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন। তবে পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা নিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করার পর মেডিকেল কলেজগুলোতে আসন সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলেছেন। এই বিষয়টি সংসদের বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।