পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ফের প্রবল কম্পনে কেঁপে উঠল তুরস্ক। কাল তিন বারের পরে আজ, বুধবার প্রবল কম্পনে কাঁপল তুরস্ক। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ৫.৫। এখনও পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪৪০০। আহত ১৪ হাজার। ভারত সহ ২০টি দেশ তুরস্কের পাশে দাঁড়িয়েছে। গতকাল তিনবার কম্পন ছাড়াও ৫০ বার আফটার শক হয়েছে। সিরিয়াতেও মৃত্যুর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে গেছে। মৃত্যু হয়েছে ১৪৪৪ জনের। আহতের সংখ্যা ৩৫০০। জোর কদমে চলছে উদ্ধার কাজ।
অন্যদিকে তুরস্কে গুঁড়িয়ে গেছে বাড়ি ঘর। গোটা তুরস্কই এই মৃত্যুপুরীর উপরে দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় ৪৭৫৮ বাড়ি ভেঙে পড়েছে। তুরস্ক বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর(এএফএডি)প্রধান ইউনুস সেজার জানিয়েছেন, ভূমিকম্প ছাড়াও শুধুমাত্র আফটার শকেই ২৯২১ জন প্রাণহানি হয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৪৪০০।
ইতিমধ্যে ভারতের উদ্ধারকারী দল আদানাতে পৌঁছে গেছে। তুরস্ক সরকার এবং আঙ্কারায় ভারতীয় দূতাবাসের সমন্বয়ে ভারতঃভূমিকম্প-বিধ্বস্ত অঞ্চলে ত্রাণ সামগ্রীর প্রথম ব্যাচ পাঠিয়েছে। এনডিআরএফ, উদ্ধারকারী দল, স্নিফার কুকুর, চিকিৎসা সরবরাহ, ড্রিলিং মেশিন এবং অন্যান্য সরঞ্জাম ভারত থেকে মঙ্গলবার সকালে তুরস্কের আদানায় পৌঁছে গেছে। গাজিয়াবাদের অষ্টম ব্যাটেলিয়ন এবং কলকাতার দ্বিতীয় ব্যাটেলিয়নের দু’টি দল থেকে প্রায় ১০০ জন এনডিআরএফ কর্মী তুরস্কে গিয়েছেন। ত্রাণসামগ্রী নিয়ে ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান রওনা দিয়েছে তুরস্কের উদ্দেশে।
এর পর পর ৫০ বার আফটার শকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে তুরস্ক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’ আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ৩২ হাজার ছাড়াতে পারে।
সোমবার ভোরে ৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল তুরস্ক এবং সিরিয়ার উত্তর ভাগে। তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারাসহ দেশটির অন্যান্য শহরে এবং পার্শ্ববর্তী সিরিয়াসহ প্রতিবেশী দেশ লেবানন, সাইপ্রাস, ইসরায়েলেও এই ভূকম্পন অনুভূত হয়। ঘুমের মধ্যে প্রাণহানি ঘটে। ফের একবার কেঁপে উঠল তুরস্ক। এবার ভূমিকম্প মূলত অনুভূত হয়েছে মধ্য তুরস্কে। জানা গিয়েছে রিখটার স্কেলে এই কম্পনের মাত্রা ৫.৬। তুরস্কে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো হলো কাহরামানমারাস, গাজিয়ানতেপ, সানলিউরফা, দিয়ারবাকির, আদানা, আদিয়ামান, মালত্য, ওসমানিয়ে, হাতায় ও কিলিস। ভূমিকম্পে সিরিয়ার আলেপ্পো, হামা, তারতুস প্রদেশে অসংখ্য বিল্ডিং ধসে পড়েছে।
উল্লেখ্য ২০২২ সালের ২২ জুন আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে ১১০০ মানুষের মৃত্যু হয়। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.১। ২০২১ সালের ১৪ আগস্ট হাইতির ভূমিকম্পে ২২ মানুষের প্রাণহানি হয়। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.২ । ২০১৮ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে ৪৩০০ মানুষের মানুষ মারা যায়। ২০১৫ সালের ২৫ এপ্রিল নেপাল ৮৮০০ ও ২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানে সুনামির কারণে ২০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। ২০১০ সালে ১২ জানুয়ারি হাইতিতে ৩ লক্ষ ১৬ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।