মুহাম্মদ মুস্তাক আলি– জঙ্গীপুরঃ স্থগিত হয়ে থাকা ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে জঙ্গীপুর বিধানসভায় রেকর্ড ভোটে জয়ী হলেন তৃণমূল প্রার্থী জাকির হোসেন। তিনি তার নিকটতম প্রার্থী বিজেপির সুজিত দাসকে ৯২৬৩৫ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর গণনায় জাকির হোসেন পেয়েছেন ১৩৫৯৮৫ টি ভোট। সুজিত দাস পেয়েছেন ৪৩৬২০টি ভোট। বামফ্রন্ট তথা আরএসপির জানে আলম মিঞা পেয়েছেন মাত্র ৮৯৬৭ টি ভোট। নিজের জয়ের খবরে উচ্ছ্বসিত জাকির হোসেন তার জয়কে জঙ্গীপুরের সাধারণ ভোটারদের উৎসর্গ করেন। ধন্যবাদ জানিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপ্যাধায়কে। একই সঙ্গে ২০২০সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নিমতিতা রেল স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের উপরে তার উপর সংগঠিত প্রাণঘাতী হামলার দ্রুত বিচারের পুনরায় দাবি জানালেন। স্মরণ করা যেতে পারে– কলকাতার উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে ডাউন তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেস ট্রেন ধরে যাওয়ার সময় তৎকালীন রাজ্য সরকারের শ্রমপ্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনকে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে খুনের চেষ্টা হয়। ওই ঘটনার জাকির হোসেনে গুরুতর আহত হন। এখনও তিনি স্বাভাবিক ভাবে হাঁটাচলা করতে পারেন না বলে ঘনিষ্টজনেরা জানিয়েছেন।
জঙ্গীপুর বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী জাকির হোসেনের জয়ে তাঁকে এবং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন জঙ্গীপুর লোকসভার সাংসদ তথা জঙ্গীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি খলিলুর রহমান। তিনি সাংবাদিকদের সামনে কথা বলতে গিয়ে বলেন– এই জয় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপ্যাধায়ের জয়। এটা মা-মাটি-মানুষের জয়। খলিলুর রহমানের আরও বক্তব্য– তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মু্খ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিস্ক প্রসূত কন্যাশ্রী– খাদ্য সাথী– স্বাস্থ্য সাথী– লক্ষীরভাণ্ডারের মত জনমুখী প্রকল্পে রাজ্যের মানুষ তৃণমূলের প্রতি আস্থা রেখেছে এবং ভোট বাক্সে তারই প্রতিফলন ঘটছে বলে খলিলুর রহমান দাবি জানিয়েছেন। তৃণমূল প্রার্থী জাকির হোসেনের জয়ের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাজ্য সরকারের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী মুহাম্মদ আূরুজ্জামান– লালগোলা বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক মুহাম্মদ আলি– রাজ্য তৃণমূল সহ সভাপতি মুহাম্মদ সোহরাব প্রমুখ। তাদের বক্তব্যের সুর প্রায় একই ছিল। তৃণমূল প্রার্থীর জয়ের পেছনে রাজ্য সরকারের উন্নয়নমুখী কর্মসূচী এবং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে ভোটারদের অটুট আস্থারই প্রতিফলন বলে তৃণমূল নেতৃত্ব অভিমত প্রকাশ করেছেন। মুহাম্মদ আূরুজ্জামানও জাকির হোসেনের উপরে বোমা হামলার দ্রুত বিচারের দাবিতে সহমত প্রকাশ করে এ দিন বক্তব্য রেখেছেন। মুহাম্মদ আূরুজ্জামানের বক্তব্য– এই বিস্ফোরণ কাণ্ডের সঠিক এবং উপযুক্ত তদন্ত করছিল রাজ্য সরকারের পুলিশ এবং সিআইডি। তার অভিযোগ– কেন্দ্র সরকারের এনআইএ তদন্ত শুরু হওয়ায় প্রকৃত অপরাধীরা এখনও আড়ালে থেকে গেছে। মুহাম্মদ সোহরাবও এনআইএ তদন্তে সন্তুষ্ট নয় বলে তার অভিমত প্রকাশ করেছেন।
অন্যদিকে– বিজেপি ২০২১ রাজ্য বিধানসভার ভোটে জঙ্গীপুর বিধানসভায় ২০১৬ সাল অপেক্ষা অনেক কম ভোট পেয়েছে। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য– এ রাজ্যের মানুষ সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক সংগঠনটি থেকে ক্রমশ সমর্থন তুলে নিচ্ছে। এই ভোটের ফলাফল সেটাই প্রমান করেছে বলে দাবি জানিয়েছেন নব নির্বাচিত বিধায়ক জাকির হোসেনও স্বয়ং।