পুবের কলম প্রতিবেদকঃ ইতিমধ্যেই গোয়া– উত্তরপ্রদেশ– মণিপুর – উত্তরখন্ড এবং পঞ্জাব– এই পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। গোয়ায় বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপালেও বাকি চার রাজ্যের মধ্যে তিন রাজ্যতে প্রার্থী নাও দিতে পারে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।
অন্তত তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে, তেমনটাই খবর। করোনা আবহে পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের জন্য দিনক্ষণ ঘোষণা হলেও– কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উত্তর প্রদেশ– উত্তরাখণ্ড ও পাঞ্জাবে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেবে না। এ ক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টিকে তৃণমূল সমর্থন জানিয়ে দল প্রার্থী দেওয়া থেকে বিরত থাকতে পারে। একুশে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে ভোটের সময় অখিলেশ যাদবের দল এ রাজ্যে প্রার্থী না দিয়ে পুরোপুরিভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। সেই রাজনৈতিক সৌজন্যের কথা মাথায় রেখে উত্তরপ্রদেশে সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেস অখিলেশের দলকে সমর্থন জানাতে পারে।
একইসঙ্গে জানা গেছে, প্রয়োজনে অখিলেশ যাদবের অনুরোধে উত্তরপ্রদেশে প্রচারেও যেতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে বাকি দুই রাজ্য উত্তরাখণ্ড এবং পঞ্জাবে এখনই প্রার্থী দেওয়ার কথা ভাবছে না তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ দায়িত্ব নেওয়ার সময়ই দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন যে তৃণমূল কংগ্রেস সেখানেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে যেখানে জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে এবং শুধুমাত্র নিজের উপস্থিতি জানান দেওয়ার জন্য কোনও রাজ্যে ভোট যুদ্ধে যোগদান করবে না তৃণমূল। মূলত সেই স্ট্রাটিজিকে সামনে রেখেই উত্তরাখণ্ড এবং পঞ্জাবে প্রার্থী নাও দিতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস।
এদিকে এখনও পর্যন্ত যা খবর গোয়ায় দল সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাবে। সে ক্ষেত্রে ৪০ আসনবিশিষ্ট গোয়া বিধানসভায় ৩০ আসনেই লড়াই করতে পারে তৃণমূল। বাকি ১০ টি আসন যারা ছাড়তে পারে তাদের জোট সহযোগী মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টিকে। তৃণমূল সূত্রের যতটুকু জানা গিয়েছে, তাতে এই মুহূর্তে তৃণমূলের ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর গোয়াতেই রয়েছেন। গোয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে তাঁর। গোয়ায় সংগঠনের ক্ষেত্রে তৃণমূল দায়িত্ব দিয়েছে মহুয়া মৈত্র– সুস্মিতা দেব ও সৌরভ চক্রবর্তীকে। মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টির সঙ্গে তৃণমূলের আসন সমঝোতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে খবর। এবং এক্ষেত্রে ৩০ এবং ১০ আসলে রফাসূত্র মেনে নিয়েছে দুই দল।
যতদূর জানা গিয়েছে আপাতত করোনা সংক্রমণে বাড়বাড়ন্তের কারণে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গোয়া সফরে না গেলেও সেখানে দলের প্রচারের বাগডোর দেওয়া হয়েছে মহুয়া মৈত্র– সুস্মিতা দেব এবং সৌরভ চক্রবর্তী হাতে। এছাড়া বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে রয়েছেন রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনও। তৃণমূল নেতা ওমপ্রকাশ মিশ্রকেও এই দলের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। তৃণমূলের তরফ থেকে যে কথা বলা হচ্ছে আজ থেকে ১৬ তারিখ পর্যন্ত বিধানসভা ধরে ধরে প্রচার কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল। এরপর আগামী ১৭ তারিখ দলের তরফে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারে। সেক্ষেত্রে ২১ জানুয়ারি থেকেই দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে বলে জানা যাচ্ছে।
এদিকে গোয়ার পাশাপাশি মণিপুরে কয়েকটি আসনেও প্রার্থী দেবে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে ঠিক কটি আসনে প্রার্থী দেওয়া হবে সে বিষয়ে এখনই প্রকাশ্যে কিছু বলা হচ্ছে না। যতদূর জানা গিয়েছে, মণিপুরের ক্ষেত্রে নিজেদের শক্তি বিচার করে জেতার সম্ভাবনা রয়েছে এমন কয়েকটি আসনেই শুধুমাত্র প্রার্থী দিতে পারে তৃণমূল।