পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ যে বয়সে পড়াশোনা করার কথা, সে বয়সে অভাবের বাবার নির্দেশে বিয়ের পিড়িতে বসতে হয়েছিল। কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে এসেও সুখ সয়নি নাবালিকার। প্রতি রাতে মদ্যপ স্বামীর হাতে জুটত মারধর। শ্বশুর-শাশুড়ির কাছ থেকে মিলত গালি-গালাজ। এমত অবস্থায় শ্বশুরবাড়ি থেকে বাঁচতে বাবার আশ্রয়ে ফিরে এসেছিল ১৬ বছরের বিবাহিত নাবালিকা কন্যা। কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে আশ্রয় জোটেনি। তাই বাধ্য হয়ে বাড়ি সামনে কিছু দূরে বীড জেলার অম্বাজগাই বাস স্ট্যান্ডেই ভিক্ষা করতে শুরু করে সে। আর একা থাকার সুযোগে সেই নাবালিকার ওপর দিনের পর দিন ধরে পাশবিক অত্যাচার চালিয়ে গেল একদল নরখাদকের দল।
মহারাষ্ট্রের বীড জেলার এই ঘটনায় পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নাবালিকার বয়ান অনুযায়ী দীর্ঘ ছয়মাস ধরে তাকে ৪০০ জন ধর্ষণ করেছে। নির্যাতিতা নাবালিকা আরও জানিয়েছে, এই যৌন নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে সেখানে এক পুলিশ কর্মীর কাছেও ধর্ষণের শিকার হয় সে।
বর্তমানে দু’মাসের গর্ভবতী ওই নাবালিকা। চলতি সপ্তাহেই ফের সে থানার দ্বারস্থ হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির অধীনে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইন, যৌন অত্যাচার থেকে শিশুদের সুরক্ষা আইন, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বীড জেলার পুলিশ সুপারিন্ডেন্ট রাজা রামাস্বামী জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
ওই নাবালিকা পুলিশকে জানিয়েছে, কয়েক বছর আগেই তাঁর মা মারা যায়, বাবার সঙ্গেই ছিল সে। ১৬ বছর বয়স হতেই তার বাবা এক ব্যক্তির সঙ্গে তার বিয়ে দিয়ে দেয়। শ্বশুরবাড়িতে প্রতিদিনই স্বামী মারধর করত। শ্বশুরবাড়িতে নিত্য গঞ্জনার শিকার ছিল সে। পালিয়ে গিয়ে বাবার কাছে এলেও সেখানে ঠাঁই হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। ভিক্ষাবৃত্তিকে বেছে নেয় সে। অম্বাজগাই বাস স্ট্যান্ডেই ভিক্ষা করত। এখা্নে রাতের অন্ধকারে নিত্যদিন বিভিন্ন মানুষের লালসার শিকার হতে হত তাঁকে। নিজেকে বাঁচানোর বহু চেষ্টা করলেও পেরে ওঠেনি। অম্বোজগাই পুলিশ স্টেশনে গিয়ে একাধিকবার অভিযোগ জানানোর চেষ্টা করলেও পুলিশ তাঁর কথায় কর্ণপাত করেনি। উল্টে এক পুলিশকর্মী তাঁকেই যৌন হেনস্থা করে। পরে এক শিশু কল্যাণ কমিটির দ্বারস্থ হয় সে। তাদের সাহায্যেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে।