উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,সুন্দরবন : বাঘ নয়, এবার বাঘরোল সংরক্ষণে গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্য সরকার।এখন শুধু বাঘ সংরক্ষণ নয়, গোটা বিড়াল প্রজাতির সংরক্ষণে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। বন জঙ্গল কমে আসায় বাঘরোল, খটাসের মতো প্রাণীরা এখন প্রায় লুপ্তপ্রায়।তাই তাদের বাঁচাতে এগিয়ে এলো রাজ্য সরকার।স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘শের’ এতদিন ধরে সুন্দরবনে বাঘ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করে আসছে। এবার তারা বাঘরোল, খটাস সংরক্ষণেও উদ্যোগী হয়েছে।
গ্রামে গ্রামে এ বিষয়ে সচেতনামূলক প্রচার চালাচ্ছেন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।গ্রামের পাশাপাশি শহর ও শহরতলির মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে এই বিষয়ে।এ ব্যাপারে বাঘ ও বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ তথা শের সংস্থার কর্নধার জয়দীপ কুণ্ডু বলেন,বাঘ, হাতি, গণ্ডার সংরক্ষণ সর্বত্রই হচ্ছে।কিন্তু বাঘরোল বা মেছো বিড়াল কিংবা খটাস যাই বলি না কেন,এদের সংরক্ষণ সেভাবে কিন্তু হচ্ছে না। মানুষের মধ্যে এদের নিয়ে সচেতনতা কম। তাই এলাকায় বাঘরোল, খটাস দেখতে পেলেই অনেকেই এদেরকে হত্যা করছে। বাস্তুতন্ত্রে তার মারাত্মক রকমের প্রভাব পড়ছে। সেই কারণে এই সব প্রাণীদের সংরক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে।
সুন্দরবন নিয়ে কাজ করা একাধিক পরিবেশ প্রেমীদের মতে, চারিদিকে কমছে জলাভূমি।এর ফলে জীবকূলের খাদ্য ও বাসস্থানের চরমঅভাব দেখা দিয়েছে। তাই তাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন এলাকায় এই বাঘরোল বা খটাসের মতো প্রাণী দেখতে পেলেই ভয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলার প্রবণতা বেড়ে চলেছে।আর এই অপরাধ লুকাতে বনদফতর পৌঁছানোর আগেই নস্ট করে দেওয়া হচ্ছে মৃত প্রাণীদের দেহ।
আর এই বিষয়ে বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মেছো বিড়াল নিয়ে ইতিমধ্যেই গবেষণা শুরু হয়েছে।এর ফলে আগামী দিনে তাদের সংরক্ষণের কাজের সুবিধা হবে।সুন্দরবনে হওয়া সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে,বর্তমানে প্রায় ৩ শতাধিক মেছো বিড়াল আছে সুন্দরবনে। তার বাইরেও বহু এলাকা আছে যেখানে থাকে বিড়ালের বিভিন্ন প্রজাতি।এবার সেই এলাকা গুলিতেও সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।আর বিড়াল প্রজাতির এই সংরক্ষনে বাস্তুতন্ত্রের পক্ষে অনেক উপকার হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।