পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ ভোটের সময় রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিদ্বেষ ভাষণ আটকানোর ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের অসহায়তার কথা ফুটে উঠল তাদের বক্তব্যেই। বুধবার নির্বাচন কমিশন সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে, বিদ্বেষ ভাষণ বা ঘৃণ্য বক্তৃতায় আটকানোর জন্য দেশে নির্দিষ্ট কোনও আইন নেই এবং দেশের কোনও বিদ্যমান আইনের অধীনে ঘৃণাত্মক বক্তৃতার বিষয়টি সংজ্ঞায়িত করা হয়নি।
তাই নির্বাচনের সময় ‘ঘৃণাত্মক বক্তব্য’ এবং ‘গুজব ছড়ানো’ বিষয়ে নির্দিষ্ট আইনের অনুপস্থিতির কারণে নির্বাচন কমিশন ভারতীয় দণ্ডবিধি ও জনপ্রতিনিধিত্ব আইনটি প্রয়োগ করে থাকে যাতে রাজনৈতিক দলের নেতারা সমাজের বিভিন্ন অংশের মধ্যে বৈষম্য ও বিদ্বেষ তৈরির জন্য বিবৃতি না দেয়।
শীর্ষ আদালতকে একটি লিখিত জবাবে নির্বাচন কমিশন বলেছে, ‘এটি শুরুতেই উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক যে ভারতে বিদ্যমান কোনও আইনের আওতায় বিদ্বেষ বক্তব্যকে সংজ্ঞায়িত করা হয়নি। নির্বাচনের সময় ঘৃণাত্মক বক্তৃতা ও গুজব ছড়ানো আটকাতে কোনও সুনির্দিষ্ট আইনের অনুপস্থিতির কারণে রাজনৈতিক দলের নেতারা যাতে বিবৃতি দিতে না পারে তা নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচন কমিশন ভারতীয় দণ্ডবিধি ও ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধি আইন প্রয়োগ করে।’
নির্বাচন কমিশন আরও বলেছে, এই প্রসঙ্গে এ টি অভিরাম সিং বনাম সি ডি কম্যাচেন মামলায় ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক। যেখানে বলা হয়েছিল, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-ভাষা-সম্প্রদায়ের ভিত্তিতে কোনও প্রার্থী বা তার এজেন্ট যদি ভোটারদের ভোট দিতে বা ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য কোনও আবেদন করে তা ১৯৫১-এর জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের বিধান অনুযায়ী দুর্নীতির চর্চা বলে গণ্য হবে।
উল্লেখ্য, নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিদ্বেষ ভাষণ রুখতে আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায় সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন। সেখানে তিনি আবেদন করেছিলেন, ঘৃণাত্মক বত্তৃতা ও গুজব ছড়ানোকে মোকাবিলা করার জন্য একটি যথাযথ আইন প্রণয়ন করার জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশ দিক শীর্ষ আদালত।
পিটিশনে তিনি আরও বলেন, কোনও প্রার্থী বা তাঁর এজেন্ট এমন কোনও বত্তৃতায় লিপ্ত হচ্ছেন, যা সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে শত্রুতা বা ঘৃণার অনুভূতি প্রচার করে বা প্রচার করার চেষ্টা করে সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে। নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট প্রার্থী বা ব্যক্তির কাছে জবাবদিহি চাইতে পারে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে পারে এটা জানার জন্য যে, কেন সে এই ধরনের বিদ্বেষ ভাষণে লিপ্ত হয়েছিল।