দেবশ্রী মজুমদার, নানুর: অজয় নদের জল শুধু বাড়ি ঘর নয়, চুরি করে নিয়ে গিয়েছে সুনীল মাঝি, দেবু সোরেনদের স্কুলের বইপত্তরও। যেখানে বাড়ির বড়রা ধ্বংস্তূপ থেকে খুঁজছে সংসারের টুকিটাকি, বাচ্চারা খুঁজছে তাদের বই খাতা পেনসিল ও খেলার জিনিস। তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া সুনীল মাঝি বলে, পুজোর পর স্কুল খুলবে। বইতো নেই। সব তো বানে ভেসে গেছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বাচ্চাদের বই খাতা পেনসিল ভাসিয়ে নিয়ে গেছে এই ভয়াবহ বন্যা। সে ব্যাপারে একটি সার্ভে করা হয়েছে সুন্দরপুরে। গ্রামের বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রী পাশের গ্রাম বামুনিয়া বুনিয়াদি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করত। তাদের পড়ার বই পত্তর সাজ সরঞ্জাম শীঘ্রই বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেবে প্রশাসন।
অন্যদিকে, বয়সন্ধিকালে মেয়েদের ঋতুকালীন সমস্যা নিয়ে ভেবেছে জেলা ও ব্লক প্রশাসন। ইতিমধ্যে একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠনের মহিলা সদস্যদের দিয়ে সার্ভে করা হয়েছে। মঙ্গলবার সেই সমস্ত মেয়েদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে প্যাড ও ন্যাপকিন।
এই বন্যায় প্রধানমন্ত্রী গ্রামীন সড়ক যোজনায় সুন্দরপুরের পাশ দিয়ে যাওয়া আড়াই কিমি পিচের রাস্তা ধুয়ে মুছে গেছে। তাও দেখে গেছেন জেলা পরিষদের আধিকারিকরা। স্থানীয় প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে গ্রামের মধ্যে টিনের চাল ও দেওয়াল দিয়ে মেকসিফ্ট বাড়ির কথা ভাবছে জেলা প্রশাসন। তবে সমস্যায় ফেলেছে গ্রামের বাড়ির জায়গায় বড় বড় গর্ত। সেগুলো মাটি দিয়ে ভরাট করতে হবে। তার জন্য ধারে মাটি নেই। তাই শীতের কথা মাথায় রেখে আপাতত অন্য জায়গাই মেকসিফ্ট বাড়ি তৈরির কথা ভাবছে প্রশাসন। মানুষের হাতে কাজের যোগান দিতে বন্যাকবলিত এলাকায় শুরু হয়েছে একশো দিনের কাজ।
নানুর ব্লকের বিডিও সৌভিক ঘোষাল বলেন, গ্রামের মধ্যে যে ধ্বংসস্তূপ নোংরা পড়ে আছে একশো দিনের কাজের মাধ্যমে তা সরানো হচ্ছে। এছাড়াও বাঁধের জন্য প্রায় দুই থেকে আড়াইকোটির মতো একটি এস্টিমেট করা হয়েছে। শীঘ্রই সেই কাজের টেণ্ডার চাওয়া হবে।
জানা গেছে, বন্যার্ত মানুষের সাহায্যে পাশে দাঁড়িয়েছে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ। যেমন প্রথম থেকে পাশে আছে কীর্ণাহারের তরুণ সমিতিও।