পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস। বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে ৯ সেপ্টেম্বর এই সফরে যাচ্ছেন তিনি। নিউ ইয়র্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রাষ্ট্রসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টেফান ডুজারিচ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ডুজারিচ বলেন, পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কোটি কোটি মানুষকে মর্মান্তিক পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছে। তাদের প্রতি সংহতি জানাতে আগামী সপ্তাহে গুতেরেস পাকিস্তানে যাবেন। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলো পরিদর্শন করবেন তিনি।
পাকিস্তানের বন্যাকে ‘প্রবল সংকট’ আখ্যা দিয়ে গুতেরেসের মন্তব্য, ‘দুর্ভোগে ডুবে রয়েছে প্লাবিত পাকিস্তান। পাকিস্তানিরা বর্ষার মুখে পড়েছেন। বৃষ্টি এবং বন্যার অবিরাম প্রভাব চলছে।’ পাকিস্তানের জন্য বিশ্বের দরবারে ১৬ কোটি ডলারের অর্থসাহায্যের আবেদনও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে পাকিস্তানের বন্যাদুর্গতদের জন্য ৩ কোটি ডলারের মানবিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা করেছে আমেরিকা। এর আগে ইসলামাবাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে রবিবার পাকিস্তানে বন্যাদুর্গতদের জন্য ত্রাণ সহায়তা পাঠায় তুরস্ক ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহী।
উল্লেখ্য, গত জুন থেকে বৃষ্টিপাতে পাকিস্তানের বালুচিস্তান ও সিন্ধুসহ কয়েকটি প্রদেশ বন্যায় ভাসছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ভূমিধস ঘটছে। নদীর তীব্র স্রোতে ভেসে গেছে বহু ঘরবাড়ি ও সেতু।
কর্তৃপক্ষ বলছে, এখনও পর্যন্ত ৩ কোটি ৩৩ লক্ষেরও বেশি নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মারা গেছেন প্রায় ১,২০০ জন। পাকিস্তানের অর্ধেকটা এখনও পানির তলায়। ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ হাজার কোটি ডলারের। ধুঁকতে থাকা পাক অর্থনীতিকে চাপে ফেলে এই বন্যায় সে দেশের প্রতি সাত জনের মধ্যে এক জনই ক্ষতিগ্রস্ত। পাক পঞ্জাবের রোজহান শহরের একটি উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে, বন্যার জেরে প্রায় গোটা শহর জলকাদার তলায় চলে গিয়েছে। মার্চের শেষ দিকে উপগ্রহ মানচিত্রে শহরের যে সব জায়গায় ঘরবাড়ি, গাছপালা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল, বন্যায় আজ তা প্রায় নিশ্চিহ্ন। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবই যে পাকিস্তানের বন্যার পিছনে অনেকাংশে দায়ী, তা মনে করছে রাষ্ট্রসংঘ তথা পাক প্রশাসন।