উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, কুলতলি: আবারও সুন্দরবনে বাঘের সঙ্গে লড়াই করে এক মৎস্যজীবীকে ফিরিয়ে আনলেও পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। সুন্দরবনের কুলতলি থানার গোপালগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছারি বাজার নস্কর পাড়ার লখাই নস্কর, গত সোমবার দুপুরে আরও দু’জন সঙ্গীকে নিয়ে নদী পথে নৌকায় চেপে কাঁকড়া ধরতে যায় সুন্দরবনে। সাথে ছিল দুই সঙ্গী লক্ষণ সরদার ও সমীর সর্দার।
বৃহস্পতিবার সকালে যখন তাঁরা কাঁকড়া ধরছিল সেই সময় আচমকাই ধীবরদের দেখতে পেয়েই কালীবয়রা জঙ্গল থেকে তেড়ে বেরিয়ে আসে একটি পুর্ণবয়স্ক বাঘ। সরাসরি হামলা চালায় লখাই নস্করের উপর। বাঘটি তাঁর ঘাড়ে কামড় বসিয়ে টেনে নিয়ে যেতে চায় জঙ্গলে। সঙ্গে থাকা দুই সঙ্গী নৌকায় থাকা লাঠি, বৈঠা নিয়ে বাঘের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে নিজেদের অদম্য সাহস নিয়ে। কোনোক্রমে বাঘের মুখ থেকে উদ্ধার করে লখাইকে নিয়ে আসা হয় কুলতলির কৈখালী ঘাটে।
সেখান থেকে কুলতলি ব্লকের জামতলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।ওই ধীবরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকায় সাথে সাথে কলকাতার পিজি হাসপাতালে রেফার করে দেন চিকিৎসকরা। সেখানে এদিন বিকালেই ওই মৎস্যজীবির মৃত্যু ঘটে বলে জানা গেল। বারবার বাঘের আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলায় উদ্বিগ্ন মৎস্যজীবীরা। এই নিয়ে এ বছরে এখনো পর্যন্ত বাঘে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২৯। গত বছরেও আক্রান্ত ২৯ ছিল।
তবে এবছরে আক্রান্তের সংখ্যা গতবারের রেকর্ড পেরিয়ে যেতে পারে বলে মনে করেছেন এপিডিআর। এপিডিআরের জয়নগর শাখার সম্পাদক মিঠুন মন্ডল বলেন, বিকল্প কর্মসংস্থান না পেয়ে মৃত্যু ভয়কে পাথেয় করে এই সব মৎস্যজীবিরা জঙ্গলে গিয়ে বাঘের শিকার হচ্ছে। অবিলম্বে বাঘে আক্রান্তদের সরকারি ক্ষতিপূরন, চিকিৎসা ও বিকল্প কাজের ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে।