পারিজাত মোল্লা: বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট গণধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের প্রাক্তন মুখ্যসচিব জিতেন্দ্র নারায়ণের জামিন বহাল রাখল। এই আইএএস অফিসারকে জামিন দেওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নির্যাতিতা।
চলতি বছরের গত ২০ ফেব্রুয়ারি ধর্ষণ এবং যৌন নিগ্রহের মামলায় ধৃত জিতেন্দ্রে নারায়ণের জামিনের আর্জি মঞ্জুর করেছিল কলকাতা হাইকোর্টের অধীনে থাকা পোর্ট ব্লেয়ার বেঞ্চ। আদালতের নির্দেশে মুক্তি পান তিনি। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যান ওই নির্যাতিতা। তিনি তাঁর দাখিল পিটিশনে জানিয়েছেন, ‘ জামিনের ফলে তদন্ত এবং বিচার প্রক্রিয়া ‘প্রভাবিত’ হতে পারে ‘। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি এ আমানুল্লাকে নিয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ এদিন জামিন বাতিলের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।
আদালত সুত্রে প্রকাশ, গত বছরের অক্টোবরে এক মহিলা জিতেন্দ্র নারায়ণের বিরুদ্ধে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। তার পরেই তাঁকে চাকরি থেকে সাসপেন্ড করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। পরবর্তীতে তাঁর(আমলা) বিরুদ্ধে পোর্ট ব্লেয়ারের সরকারি বাড়িতে যৌনব্যবসা চালানোর অভিযোগ তোলেন এক তরুণী।
অভিযোগ ওঠে, অন্তত ২০ জন মেয়েকে বাড়িতে ডেকে এনে টাকার বিনিময়ে যৌনতায় লিপ্ত হতে বাধ্য করেছেন জিতেন্দ্র। ওই আমলার পাশাপাশি ওই তরুণীর নিশানায় ছিলেন আন্দামান ও নিকোবর প্রশাসনের আরও এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক— শ্রম দফতরের ডিরেক্টর আরএল ঋষি।পুলিশে অভিযোগ দায়েরের পরেই গ্রেফতারি এড়াতে নিম্ন আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়েছিলেন ওই আমলা। কিন্তু সেই অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ শেষের পরে গত ১০ নভেম্বর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে।
উল্লেখ্য , আন্দামান ও নিকোবরের মুখ্যসচিব পদে থাকা জিতেন্দ্র নারায়ণ কে গত বছরের জুলাই মাসে দিল্লিতে বদলি করা হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে প্রকাশ দিল্লি যাওয়ার সময় তাঁর বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজও মুছে দেওয়া হয়েছিল। যদিও যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জিতেন্দ্রর পাল্টা দাবি, -‘তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়েছে। যে তারিখে তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনা হয়েছে, সেদিন পোর্ট ব্লেয়ারে তিনি ছিলেন না বলেও দাবি করেছেন আন্দামানের প্রাক্তন মুখ্যসচিব।বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ অভিযুক্ত এই আমলার জামিন খারিজের আবেদন বাতিল করে দেয়।