পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : সমাজকর্মী ‘সিভিক’ চন্দ্রনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলায় নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কেরালা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল রাজ্যের সরকার। এক দলিত মহিলার যৌন নিপীরনের মামলায় ৭৪ বছর বয়সী সমাজ কর্মী ‘সিভিক’ চন্দ্রনকে জামিন দেয় নিম্ন আদালত। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কেরালা সরকার শুক্রবার এই আদেশ বাতিলের দাবিতে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়। এমনকী নিম্ন আদালতের রায়কে ‘আইনের বিরুদ্ধাচরণ’ ও ‘স্পষ্ট ত্রুটি’ বলে উল্লেখ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে কেরল সরকার।
৭৪ বছর বয়সি বৃদ্ধ সমাজকর্মী ‘সিভিক’ চন্দ্রনের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনেন এক তরুণী। সমাজকর্মী চন্দ্রন আদালতে অভিযোগকারিণীর কিছু ফোটো আদালতের কাছে পেশ করেন। তাতে মেয়েটিকে খোলামেলা পোশাক পরে থাকতে দেখা যায়। এরপরই কোর্ট জামিনের সিদ্ধান্ত নেয়। অনেকে দাবি করে থাকেন, শ্লীলতাহানির ক্ষেত্রে একটি মেয়ে কেমন পোশাক পরে আছে, তা বিচার করা ঠিক নয়।
অভিযোগকারিণী দাবি করেন, এই শ্লীলতাহানির ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। সমাজকর্মী ও লেখক চন্দ্রনের বিরুদ্ধে তরুণী লেখিকা এই অভিযোগ এনেছিলেন। তার অভিযোগ, ২০২০ সালে চন্দ্রন ক্যাম্পের আয়োজন করে। সেদিন তাকে নির্জন স্থানে নিয়ে যায় এবং অশালীন আচরণ করে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় স্পর্শ করে। এমনকী তাকে জোর করে কোলে বসিয়ে যৌন হয়রানি করে বলে অভিযোগ তুলেছেন লেখিকা। এই মামলায় ৭৪ বছর বয়সি চন্দ্রন আগাম জামিনের আবেদন করেন। সঙ্গে সঙ্গে ওই লেখিকার কিছু ফোটো আদালতে জমা দেন। ছবিগুলো দেখে দায়রা আদালত আগাম জামিনের রায় দেয়।
কোঝিকোড় দায়রা আদালতের বক্তব্য, ৩৫৪-এ ধারা এক্ষেত্রে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে লাগু করা যায় না। কারণ, এখানে অভিযোগকারিণী নিজেই যৌন প্ররোচনামূলক পোশাক পরেছিল। আর ৭৪ বছর বয়সি একজন শারীরিকভাবে অক্ষম বৃদ্ধ কীভাবে তাকে জোরপূর্বক কোলের উপর বসাল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আদালত। এটা অসম্ভব বলে মনে করছে আদালত। আদালত জানায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি জাতিভেদ প্রথার বিরুদ্ধে নিজেই লড়াই করছেন এবং বেশ কয়েকটি আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত।
এই মামলায় রাজ্য সরকারের তরফে যুক্তি দিয়ে বলা হয়, নিম্ন আদালতের এই রায় কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। নৃশংসতা প্রতিরোধের জন্য আইনের বিরুদ্ধে গিয়ে আদালত তার রায় দিয়েছে। তাই এটি একপেশে রায়।
এ বছরের ২৯ জুলাই পুলিশ অভিযোগটি নথিভুক্ত করে। ঘটনার দু-বছর পরে কেন অভিযোগ দায়ের হল, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
উল্লেখ্য, সমাজকর্মীর বিরুদ্ধে গত এপ্রিল মাসে দুটি যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। কয়লান্দি পুলিশ চন্দ্রনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল, কিন্তু প্রথম মামলা নথিভুক্ত হওয়ার পর থেকে সে পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি। চন্দ্রনকে প্রথম মামলায় ২ আগস্ট এবং দ্বিতীয় মামলায় ১২ আগস্ট আগাম জামিন দেওয়া হয়।