পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : এপ্রিল আমেরিকাসহ গোটা পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার শর্ত না মানলে এই যুদ্ধ যে আরও দীর্ঘ হবে তা আপাতত স্পষ্ট। এদিকে পুতিনকে যুদ্ধাপরাধী হিসাবে তুলে ধরে আরও সংকট সৃষ্টি করেছে ওয়াশিংটন। পশ্চিমা মিডিয়ায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে খবর হচ্ছে, অথচ অতীতে সিরিয়া, ইরাক, লিবিয়া বা আফগানিস্তানের মতো দেশে আমেরিকার চালানো গণহত্যার ইতিহাস ধামাচাপা দেওয়ার প্রয়াস অব্যাহত। এমতাবস্থায় জোরদার হামলা চালিয়ে পূর্ব ইউক্রেনের দোনবাস এলাকার ক্রেমিনা শহর দখল করে নিল রুশ সেনাবাহিনী। রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রক সূত্রে খবর, রাতারাতি দোনবাসসহ ইউক্রেনের অন্যান্য শহরের ১২০০টিরও বেশি অবস্থানে হামলা চালানো হয়েছে। বলাই বাহুল্য, যুদ্ধে রাশিয়ার এই অগ্রগতি দেখে এখন অনেকটাই ব্যাকফুটে পশ্চিমারা। এদিকে, মঙ্গলবার ইউক্রেনের মারিউপোল শহরের সেনাকে আত্মসমর্পণ করার পরামর্শ দিয়েছে মস্কো। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা আধিকারিক ইগর কোনাশেনকভ বলেন, ইউক্রেনীয় সেনাদের যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছে রাশিয়া, এভাবে দুই পক্ষের মধ্যে যোগাযোগের একটি চ্যানেল খোলা যাবে, ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী কোনও রকম ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে নিরাপদে চলে যেতে পারবে। তবে সবকিছুর আগে শর্ত হল, অস্ত্র নামিয়ে রাখতে হবে ইউক্রেনীয় সেনাকে। কোনাশেনকভ আরও বলেন, ইউক্রেনের ওডেসা শহরে নতুন করে উস্কানি দিচ্ছে ইউক্রেনীয় সেনা। সেখানে তারা রুশ সেনার পোশাক পরে ইউক্রেনীয়দের হত্যা করার ছক করছে বলে অভিযোগ মস্কোর।
আরও অভিযোগ, এই পন্থা অবলম্বন করে পশ্চিমা মিডিয়া রাশিয়ার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। কোনাশেনকভের সতর্কতা, ‘রুশ সেনার উর্দি পরে ইউক্রেনীয় সেনা সাধারণ মানুষকে গুলি করবে এবং সেই হত্যাকাণ্ডের ফুটেজ পশ্চিমা ও ইউক্রেনীয় মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার করা হবে। রুশ প্রতিরক্ষা বিভাগের এই আধিকারিক আরও জনান, সোমবার ইউক্রেনের ১৩টি অঞ্চলে রাশিয়ার উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। ইউক্রেনীয় সেনার ৬০টি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে রাশিয়া। ১২৬০টি টার্গেটে রকেট হামলা চলেছে। এর ফলে ইউক্রেনের ২৫টি সেনা পরিচালনা কেন্দ্র ও অস্ত্রাগার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইউক্রেনের একটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, আরও চারটি ইউক্রেনীয় আকাশযানও ধ্বংস করেছে রুশ সেনাবাহিনী। কোনাশেনকভ বলেন, ‘বিশেষ অভিযান শুরুর পর থেকে সব মিলিয়ে ১৪০টি য্দ্ধুবিমান ও ৪৮৭টি মনুষ্যবিহীন আকাশযান ধ্বংস করা হয়েছে। পাশাপাশি ২৫২টি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, ২৩৫৩টি ট্যাঙ্ক ও অন্যান্য ভারি অস্ত্রযুক্ত সেনাযান, রকেট লঞ্চার, আর্টিলারি ইউনিট ও মর্টার গান ধ্বংস করা হয়েছে।’ রাষ্ট্রসংঘের তথ্যানুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখনও পর্যন্ত ২ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, আহত কমপক্ষে ৩ হাজার। ইউক্রেন ত্যাগ করে অন্য দেশে আশ্রয় নিয়েছেন ৪৯ লক্ষ মানুষ, ৭০ লক্ষ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত।