পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ নবী সা.কে নিয়ে বিজেপি মুখপাত্রের আপত্তিকর মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন সউদির দুই পবিত্র মসজিদ কমিটির প্রেসিডেন্ট আল সুদাইস ও আরব দেশগুলির জোট জিসিসির মহাসচিব নায়েফ আল হাজরাফ।
ভারতের বুকে সংখ্যালঘু নির্যাতন লাগাতার বৃদ্ধি পাচ্ছিল। মুসলিমদের সব সুযোগ সুবিধা ছিনিয়ে নেওয়া, কাজের অধিকার সীমিত করে দেওয়া, মসজিদ ভেঙে দেওয়া- এরকম বহু ঘটনা খবরের শিরোনামে উঠে আসছিল। তবে এবার নবী মুহাম্মদ সা.র অবমাননার মাধ্যমে আরব বিশ্বের আবেগে ঘা দিয়েছে বিজেপি সরকার। কথায় বলে, যেমন কর্ম, তেমন ফল। ভারতীয় মুসলিমদের আঘাত করতে গিয়ে গোটা মধ্যপ্রাচ্যের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছে বিজেপি সরকার। শাসকদলের দুই মুখপাত্রের সাম্প্রতিক কিছু মন্তব্যে এ মুহূর্তে বিপাকে ভারত। বিশ্বজুড়ে দেশটির বিরুদ্ধে নানা ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। মহানবী মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ক্ষমা চেয়ে বিবৃতিতে জানায়, কোনও ধর্মের প্রতি অবমাননা তাদের দল সমর্থন করে না। এরপর বিজেপি তাদের মুখপাত্র নূপুর এবং জিন্দালকে দল বহিষ্কার করে। তবে এতে আরববিশ্বে লাগা আগুন নেভেনি। সউদি আরব, বাহরাইন, কাতার, কুয়েত ও ইরান ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে ডেকে নবী (সা.) সম্পর্কে মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছে। কাতারের দাবি, ভারত সরকারকে এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ অভিযোগ করেছেন, ভারতের বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের সময় সংখ্যালঘু মুসলিমরা বিপন্ন। কেবল এ কয়টি দেশই নয়, বিশ্বজুড়ে এর তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। নানা ধরনের কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে বিভিন্ন দেশ। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি আরব দেশ ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কড়া ভাষায় এর প্রতিবাদ জানিয়েছে। কুয়েতে শুরু হয়েছে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক। বিভিন্ন মার্কেট থেকে ভারতীয় পণ্য সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। এর সাথে নতুনভাবে শুরু হয়েছে ভারতীয় শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত ও বহিষ্কারের বিষয়টি। সউদি আরবসহ উপসাগরীয় ব্যবসায়ীদের কোম্পানিগুলো থেকে অমুসলিম ভারতীয় কর্মীদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাদের ভিসা স্থগিত করা হচ্ছে এবং লেনদেন মিটিয়ে তাদেরকে বাড়ির পথ দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে। নিজের ট্যুইটারে শেখ আলি আল জামাল নামে ইয়েমেনের এক বড় ব্যবসায়ী লিখেছেন, ‘আমি আমার কোম্পানিতে থাকা সব অমুসলিম ভারতীয় শ্রমিককে বরখাস্ত করেছি। তাদের সমস্ত বকেয়া-পাওনা রিটার্ন টিকিটের সাথে দিয়ে দিয়েছি। শীঘ্রই সব ভারতীয় পণ্যের লেনদেন ও ব্যবসা-বণিজ্য বন্ধ করে দেব। কারণ আমার বিশ্বাস ও ভালোবাসা নবীর প্রতি।’ উল্লেখ্য, উপসাগরীয় অঞ্চলে কর্মরত ভারতীয়দের সংখ্যা প্রায় এক কোটি। এদের মধ্যে অমুসলিম কর্মীর সংখ্যাও অনেক। মহামারি করোনা ও যুদ্ধের কারণে ভারতের অর্থনীতি এমনিতেই বিপর্যস্ত। এর মধ্যে মাত্র এক সপ্তাহ ভারতের পণ্যসামগ্রী মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বয়কট করলে ভয়াবহ অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখোমুখি হবে ভারত।