দেবশ্রী মজুমদার, বোলপুর: বাউল সম্রাট পূর্ণ দাসের আখড়ার জায়গা জবর দখল বীরভূমে, তাই বাধ্য হয়ে আদালতে গেলেন শিল্পী। বেশ কয়েক বছর আগে বাউলের আখড়া গড়ে তুলবেন বলে বীরভূমের ইলামবাজারে কয়েক বিঘে জমি কিনেছিলেন প্রখ্যাত বাউল শিল্পী পূর্ণদাস বাউল। তাঁর সেই জমি ক্রমশ বেদখল হতে শুরু করেছে, এমন অভিযোগ তুলে আদালতের দরজায় কড়া নাড়লেন শিল্পী।
ইলামবাজার থানার পুলিশ এবং ব্লকের ভূমি ও ভূমিসংস্কার আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার সরেজমিনে নিজের জমি দেখতে গিয়েছিলেন পূর্ণদাস বাউল। জবর দখলকারীদের সঙ্গে প্রশাসনের লোকজন ইতিমধ্যে কথাও বলেছেন। কিন্তু অভিযুক্তরা জমির দখলদারি ছাড়তে নারাজ। তাই বাধ্য হয়ে আদলতের দ্বারস্থ হয়েছেন বাউলশিল্পী।
২৬ অক্টোবর এই মামলার শুনানি আছে। প্রবীণ বাউল শিল্পী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রশাসনিক স্তরে ন্যায় বিচার না পেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হব।’
পূর্ণদাস বাউলের পুত্র দিব্যেন্দু দাস বাউল জানান, বীরভূম জেলার ইলামবাজার থানার অন্তর্গত কামরপাড়া এলাকায় চার বিঘে জায়গা বেশ কয়েক বছর আগে বাবা কিনে রেখেছিলেন। জমিটি চাষজমি হিসাবে চিহ্নিত রয়েছে। মাঝে মধ্যে তাঁরা লোক দিয়ে চাষও করিয়েছেন।
দিব্যেন্দু অভিযোগ, ২০০৬ সাল থেকে একটু একটু করে জমির জবরদখল শুরু হয়। কর্মেসূত্রে বিদেশে থাকার জন্য সব সময় জমিতে আসাও সম্ভব হয় না। সেই সুযোগে জমি দখল করে বসেছে কিছু মানুষ। অতিমারি পরিস্থিতিতে বিদেশের অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় বর্তমানে শান্তিনিকেতনে আছেন। জমি দেখতে গিয়ে দখলদারির কথা জানতে পারেন তিনি।
জমি উদ্ধারে বাউলশিল্পীর পুত্র দিব্যেন্দু দাস ইতিমধ্যে বীরভূমের জেলাশাসক, মহকুমা শাসক, ভূমি ও ভূমিসংস্কার আধিকারিকদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। ইলামবাজার থানাতেও এই মর্মে একটি অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
শুক্রবার দখল হওয়া ওই জমি মাপজোক করতে আমিন নিয়ে ছেলের সাথে ইলামবাজারে গিয়েছিলেন পূর্ণদাস বাউল। পূর্ণদাস বাউল দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘এতদিন দেখে এসেছি বাউলদের জন্য লোককে ভিটেমাটি দান করতে। আজ আমার আখড়া বানানোর জমি দখল হয়ে যাচ্ছে। এটা খুবই বেদনাদায়ক। স্থানীয় প্রশাসনের সমস্ত স্তরে জানানো হয়েছে। কোনও সুরাহা না পেলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানাব।’