পুবের কলম প্রতিবেদক: কমিশনের ফুল বেঞ্চ রাজ্যে আসার আগে যে সমস্ত নির্দেশ পাঠিয়েছিল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে তার কোনোটাই পালন করা হয়নি। সূত্রের দাবি, সোমবার ধর্মতলায় একটি তারকা হোটেলে রাজ্যের সমস্ত ডিএম-এসপিদের নিয়ে বৈঠকে এভাবেই উষ্মা প্রকাশ করে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। কমিশনের সাফ বক্তব্য, আইনকে কাজে লাগিয়ে যে কাজ করা যায়, সেই কাজ করতে আপনারা ব্যর্থ। রাজ্যের শাসক দল ছাড়া বাকি সব স্বীকৃত রাজনৈতিক দলই ভুয়ো ভোটার লিস্ট নিয়ে যে অভিযোগ তুলেছে, তা আপনাদের কাছে কাম্য নয়। আপনারা সবাই আপনাদের পদে আছেন নিজেদের যোগ্যতা নিয়ে। ভুয়ো ভোটার লিস্ট নিয়ে যে অভিযোগ জমা পড়েছে তা নিয়ে কমিশনকে ভাবতে হচ্ছে। কেন আপনারা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করবেন না? ফিরে গিয়ে নিজের নিজের এলাকায় গিয়ে বৈঠক করে জানুন কার কি সমস্যা আছে। না পারলে ছেড়ে দিন। আপনার জায়গায় অন্য কেউ করবে। কমিশন জানে কিভাবে কাজ করিয়ে নেওয়া যায়। আর কোনো টাল বাহানা সহ্য করবে না কমিশন।
সূত্রের দাবি, কমিশনের প্রশ্ন, কেন জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে এত সমস্যা হচ্ছে? কেন জামিন অযোগ্য ধারায় যাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে তারা খোলা ঘুরে বেড়াচ্ছে? দশদিনের মধ্যে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা শূন্য করুন। না হলে কমিশন জানে কিভাবে কি করতে হয়। কোনও জেলাশাসকই কথা শোনেনি কমিশনের। কমিশনের নির্দেশ পালন করতে আপনাদের অসুবিধা কোথায়? কমিশন একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান। কোনও রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থাকে না। পাশাপাশি, রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে কমিশন জানিয়েছে, এক সপ্তাহে আপনার জেলায় পরিবেশ স্বাভাবিক করার চেষ্টা করুন। অন্যথায় কড়া পদক্ষেপ নেবে কমিশন। কমিশনের চোখ হচ্ছেন আপনারা। সেই জায়গায় কমিশনকে আপনারা ভুল পথে পরিচালিত করছেন।
সূত্রের দাবি, সোমবার জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ নিয়েই কমিশনের নির্দেশ, রাজ্যের সামগ্রিক পরিস্থিতিকে অবিলম্বে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করুন। অন্যথায় কমিশন নিজের পদক্ষেপ নেবে। এদিন ভুয়ো ভোটার নিয়ে সরব হয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। সূত্রের দাবি, কমিশনের প্রশ্ন, “ভোটার তালিকা থেকে কেন মৃত ব্যক্তিদের বাদ দেওয়া হচ্ছে না?” সূত্রের দাবি, এদিন ভুয়ো ভোটার নিয়ে ফুল বেঞ্চের প্রশ্নের মুখে পড়েন একাধিক জেলার জেলাশাসক। জেলাশাসক-পুলিশ সুপারের বৈঠকে চিফ ইলেকশন কমিশনারের কড়া বার্তা, “অভিযোগ এসেছে একাধিক অফিসার সঠিক পদক্ষেপ করছেন না। হিংসা পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। হিংসার কোন জায়গা দেওয়া যাবে না নির্বাচন চলাকালীন। বৈঠকে সবাইকে মাঠে নেমে কাজ করার নির্দেশ দেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার।
সূত্রের দাবি, বৈঠকের প্রথম এক ঘণ্টার মধ্যেই ভুয়ো ভোটার নিয়ে জেলাশাসক-পুলিশ সুপারদের প্রত্যেক সপ্তাহে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠক করার বার্তা দেয় কমিশন। কমিশনের নির্দেশ এটা বাধ্যতামূলকভাবে করতে হবে। লোকসভা নির্বাচনে বিজ্ঞপ্তি জারি হবার পর থেকেই জেলাশাসক পুলিশ সুপারদের সপ্তাহ ভিত্তিক বৈঠক বাধ্যতামূলক। জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের একসঙ্গেই বৈঠক করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশনের ফুল বেঞ্চ।