পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ মোটা কিংবা পাতলা, সমাজে কটু বাক্য আর বক্র চাহনির মুখে পড়তেই হয় প্রায় সকলকেই। অবাক হলেও সত্যি যে সমাজে এই রকম ঘটনা অহরহ ঘটতে থাকে। সম্প্রতি এমনই এক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটি মহিলা কাঁদছে এবং বলছে আমাকে ফ্লাইটে উঠতে দিচ্ছে না। আমি বাড়ি যেতে চাই। আমি অতিরিক্ত মোটা হওয়ার কারণে তারা আমার সঙ্গে এই ব্যবহার করছে।
ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওটি মূলত ব্রাজিলিয়ান মডেল জুলিয়ানা নেহমের। তাঁকে ২২ নভেম্বর বৈরুত থেকে দোহা যাওয়ার ফ্লাইটে উঠতে দেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ করেন তিনি।
সামাজিক মাধ্যম ইন্সটাগ্রামে পোস্ট করে ব্রাজিলের সাও পাওলোর বাসিন্দা জুলিয়ানা নেহমে জানান, লেবাননের বেইরুট থেকে দোহায় আসবেন বলে কাতার এয়ারওয়েজের বিমানের ইকোনমি ক্লাসের টিকিট কেটেছিলেন তিনি। দোহা থেকে সাও পাওলো আসার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু ২২ নভেম্বর বেইরুট থেকে বিমানে ওঠার সময় তাকে বাধা দেয় এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ।
৩৮ বছর বয়সি মডেলকে বলা হয়, তাঁর চেহারা ইকনোমিক ক্লাসে ভ্রমণ করার জন্য অতিরিক্ত বড়। তাই ১ হাজার ডলার দিয়ে টিকিট কেটে রাখা সত্ত্বেও তাঁকে কিছুতেই বিমানে উঠতে দেয়নি সংস্থাটি। তাঁকে ৩ হাজার ডলার দিয়ে বিজনেস ক্লাসের টিকেট কাটতে বলা হয়।
৩৮ বছরের জুলিয়ানা নেহমে একজন ব্রাজিলিয়ান মডেল। যার ফলোয়ার সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৬৮ হাজার। এদিন তিনি আরও বলেন, আমার শারীরিক আয়তনের জন্য কাতার এয়ারওয়েজের যে হীনমন্যতা সেটি সত্যিই লজ্জাজনক। তাঁর শারীরিক আকারের জন্য কাতার এয়ারওয়েজ বৈষম্যমূলক যে আচরণ করেছে তাঁর বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ার সোচ্চার হয়েছেন জুলিয়ানা নেহমে । বিমান সংস্থার এই কীর্তিতে তাঁর ঠিক সময়ে দেশে ফেরাই হয়নি।
এদিন তিনি সামাজিক মাধ্যমে আরও জানান, আমি মোটা হলেও অন্য সবার মতো। তিনি বলেন এর আগেও আমি ইকোনোমিক ক্লাসে ভ্রমণ করেছি। তবে এই ভাবে হেনস্থার শিকার এই প্রথমবার হলাম। আমার সঙ্গে হওয়া অবিচারের ঘটনা যখন আমি ক্যামেরায় রেকর্ড করতে থাকি, একজন ক্রু মেম্বার এসে আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। এত মানুষের সামনে হেনস্থা করার এই ঘটনায় আমি মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছি। এই জন্য তিনি একটি মামালাও দায়ের করেন।
সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, সাও পাওলোর একটি আদালত এই ঘটনায় কাতার এয়ারওয়েজকে জুলিয়ানার চিকিত্সার খরচ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আদালত জানিয়েছে, প্লাস সাইজ মডেলের সাইকোথেরাপির জন্য ১ বছর ধরে সেশন-পিছু ৭৮ ডলার করে দিতে হবে কাতার এয়ারওয়েজকে। ফলে, এক বছরে মোট ৩৭১৮ ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বিমান সংস্থাটিকে। যদিও তাদের বিরুদ্ধে ওঠাও অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে কাতার এয়ারওয়েজ।
View this post on Instagram