দেবশ্রী মজুমদার, নানুর: অজয় নদের বানে মানুষ টাকাকড়ি, ঘরবাড়ি সর্বস্ব তো খুইয়েছেন। খোয়া গিয়েছে বাড়ির দলিল, পরচা, রেশন কার্ড, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র। উদ্বিগ্ন সুন্দরপুর এলাকার বানভাসি মানুষ। এবার তাঁদের পাশে দাঁড়াল সরকার। তাঁদের সঙ্গে দেখা করে খোঁজ খবর নিলেন জেলাশাসক বিধান রায়।
এদিন দুর্গত এলাকায় কার্যত বিশেষ দুয়ারে সরকার চালু করল জেলা প্রশাসন। দুর্গত মানুষজনের হাতে তুলে দেওয়া হল বেশ কিছু ফর্ম। সেগুলো পূরণ করার পর পনেরো দিনের মধ্যে সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ নথি।
এছাড়াও সাপ খোপ ও দিনের গরম থেকে রেহাই দিতে সত্বর পপলিং মেশিন দিয়ে আবর্জনা সরিয়ে আপাতত চালাঘর বানানো হবে। সুন্দরপুর গ্রামে তিনজন প্রসূতি আছেন। তাঁদের মধ্যে একজনের সন্তান হওয়ার তারিখ চলে আসায়, তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকি দুজন প্রসূতি ও বয়স্কদের প্রতিদিন নজরে রাখছেন স্থানীয় আশাকর্মীরা।
এদিন দুর্গত মানুষদের খাওয়ার তদারকি জেলাশাসক নিজে করেন। তাঁদের কোনও অসুবিধা হচ্ছে কিনা জানতে চান। খাবার মেনুতে কি রাখা হয়েছে, সেটাও দেখেন।
জানা গেছে, সুন্দরপুর গ্রামে দুটি সাবমার্সিবল পাম্প বসানো হয়েছে। এলাকায় চুন ও ব্লিচিং পাউডারের মিশ্রণ ছড়ানো হয়েছে। এক জায়গাই থাকলে সকলকে মাস্ক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
জেলাশাসক বলেন, যেহেতু সুন্দরপুর হিন্দু প্রধান গ্রাম এবং বন্যার কারণে এবার সেখানকার মানুষ মায়ের অঞ্জলি দিতে পারবেন না, আশেপাশের মুসলিম প্রধান গ্রামের মানুষজন ইতিমধ্যে পুজো নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন অন্য সম্প্রদায়ের মানুষ পুজোর ব্যাপারে অগ্রণী হয়ে হিন্দু ভাইদের পাশে থাকতে চান। বিষয়টি আমার খুবই ভালো লেগেছে। এই আমাদের বাংলার সংস্কৃতি। প্রশাসনের তরফে এমন সম্প্রীতির কাজকে সব রকম সাহায্য করা হবে বলে জানানো হয়েছে।