পুবের কলম প্রতিবেদক: নাবালিকা প্রেমিকাকে নিয়ে ফেরার হয়েছিল যুবক, পুলিশের সহযোগিতায় সম্প্রতি ফিরে পেয়ে ফের স্কুলে পাঠানো শুরু করেছিল নাবালিকার বাবা-মা। এর পরীক্ষার দিন স্কুলে ঢুকে ওই নাবালিকাকে নিয়ে পালানোর চেষ্টা। বাধা দিতেই নাবালিকার গলায় ছুরি চালালো যুবক। বাঁচাতে গিয়ে ছুরিতে আক্রান্ত হলেন নাবালিকার বাবাও।
বুধবার বেলা এগারোটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা থানার অন্তর্গত রসকুণ্ডু উচ্চ বিদ্যালয়ে। আক্রমণকারী যুবককে আটক করেছে গড়বেতা থানার পুলিশ। আক্রান্ত নাবালিকা ও তার বাবার চিকিৎসা করানো হয় হাসপাতালে। আহত ছাত্রী ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর পড়ুয়া। ওই ছাত্রীর সঙ্গে গোয়ালতোড় থানার খড়কাটা গ্রামের যুবকের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিলো বলে স্থানীয়দের দাবি। কয়েক মাস আগে ওই ছাত্রীকে ফুসলিয়ে নিয়ে ফেরার হয়েছিল বলে অভিযোগ ওই যুবকের বিরুদ্ধে।
দুই সপ্তাহ পর মেয়ের খোঁজ পেয়ে পুলিশের সহযোগিতায় নাবালিকা মেয়েকে উদ্ধার করেছিলেন বাবা। পুলিশ উদ্ধার করে হোমে ২৫ দিন রাখার পর প্রশাসনিক নিয়মে বাবা বাড়িতে আনতে পেরেছিলেন মেয়েকে। এরপর ফের মেয়েকে বিদ্যালয় পাঠিয়ে পড়াশোনা করানোর চেষ্টা করেছিলেন বাবা। বুধবার ইংরেজি পরীক্ষা ছিল বিদ্যালয়ে। মেয়েকে স্কুলে ঢুকিয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাবা। ওই সময় স্কুলের পেছন দিয়ে সকলের অলক্ষে বিদ্যালয়ে ঢুকে পড়েছিল সেই পুরনো প্রেমিক গোয়ালতোড়ের বাসিন্দা যুবক গোবিন্দ বিশ্বাস। ওই ছাত্রীকে ক্লাসে ঢোকার আগেই ধরে ফেলে সে। ফের নিয়ে বেরিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। ওই ছাত্রী তাতে অসম্মত হলে গলায় ছুরি চালিয়ে দেয় যুবক। ছাত্রীর চিৎকারে ছুটে আসে বাইরে থেকে অন্যান্যদের সঙ্গে ছাত্রীর বাবাও। দেখতে পেয়ে ছুটে বাঁচাতে গেলে ওই যুবকের ছুরিতে রক্তাক্ত হন ছাত্রীর বাবা। ততক্ষণে যুবককে ধরে ফেলে স্কুলের অন্যান্য ছাত্ররা ও স্কুলের শিক্ষকগণ। ধরে হাতে বেঁধে ফেলে। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। অন্যদিকে রক্তাক্ত ওই ছাত্রী ও তার বাবাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।
প্রাথমিক চিকিৎসার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। অন্যদিকে আক্রমণকারী যুবককে আটক করে গড়বেতা থানার পুলিশ। তবে এই ঘটনায় বিদ্যালয়ের ভেতরকার পরিকাঠামো ও পরিচালন ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বিদ্যালয়েরই একসময়কার ক্যান্টিনের মালিক বিধানচন্দ্র ঘোষ বলেন-“বিদ্যালয় এর ভিতরে ছাত্রদের এমন কিছু খারাপ কাজকর্ম হয়, যা ধরা পড়লেও প্রধান শিক্ষক উপযুক্ত ব্যবস্থা নেন না। যার কারণে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। বিদ্যালয় এর বর্তমান পরিচালন কমিটি ঠিকভাবে পরিচালনা করছেন না।”
তবে বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক স্মৃতি রঞ্জন দত্ত জানান-“ঘটনাটি ঘটেছে। আমরা জানাজানি হওয়ার পর তাদের উদ্ধার করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। সেই সঙ্গে ছেলেটিকেও আটক করেছে পুলিশ। স্কুলের ভেতরে নিরাপত্তা যাতে আরো বাড়ানো যায় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”