আইভি আদক, হাওড়া: হাওড়ার বালিতে গৃহবধূকে নৃশংস খুনের ঘটনায় গ্রেফতার মৃতার বড় মেয়ের প্রাক্তন প্রেমিক। গত ১৬ অক্টোবর রাতে বালির ধর্মতলা রোডে দীপা পাল নামের ওই গৃহবধূ খুন হন। সেই মামলার তদন্তে নেমে মূল অভিযুক্ত মনোতোষ মন্ডল নামের এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ দক্ষিণ ২৪ পরগণার সুন্দরবনের তিনজালি গদারহাট খোলাপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তকে সনাক্ত করা হয়েছে। ধৃত বাংলাদেশে পালানোর পরিকল্পনা করেছিল। মৃত দীপা পালের বড় মেয়ের প্রাক্তন প্রেমিক ছিল অভিযুক্ত মনোতোষ। শনিবার তাকে হাওড়া জেলা আদালতে তোলা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ অক্টোবর বালিতে ওই নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটেছিল। ধারালো অস্ত্র দিয়ে একাধিকবার কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল ওই গৃহবধূকে। ১৬ অক্টোবর গভীর রাতে বালি থানা এলাকার ধর্মতলা রোডের একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ওই মৃতদেহ। মৃতের নাম দীপা পাল (৩১)। দেহ উদ্ধারের পর সেটিকে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছিল পুলিশ। এই ঘটনায় একটি খুনের মামলার রুজু করে শুরু হয় তদন্ত।
জানা গিয়েছে, মৃত দীপার বাপের বাড়ি বোলপুরে। বছর কয়েক আগে প্রথম পক্ষের স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয় তার। এই পক্ষের তিনটি মেয়ে ছিল। তারা বর্তমানে বাবার কাছেই থাকেন। বনগাঁর বাসিন্দা অক্ষয় পাল নামে এক যুবকের সঙ্গে ফেসবুক মারফত আলাপ হয়েছিল দীপার। দীর্ঘ কথাবার্তায় তাদের সম্পর্কের গভীরতা তৈরি হয়।
এরপর বছরখানেক আগে তাকেই দীপাদেবী বিয়ে করেন। বালির ধর্মতলা রোডে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন তারা। দুজনের সম্পর্কও বেশ ভালোই ছিল। অক্ষয় পেশায় কলকাতার একটি হোটেলের কর্মী। কাজ সেরে প্রতিদিন রাত করেই বাড়িতে ফেরেন। ঘটনার দিন রাত প্রায় বারোটা নাগাদ কাজ থেকে আসেন। কিন্তু একাধিকবার দরজা ধাক্কা দিয়েও সাড়া পাননি। তাই বাধ্য হয়েই পিছনের পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢুকে দেখতে পান রক্তে ভেসে যাচ্ছে ঘর। ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় মাটিতে পড়ে স্ত্রী দীপার দেহ। ধারালো অস্ত্র দিয়ে মুখে একাধিক কোপ মারা হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন অংশ ধারালো অস্ত্রের দাগ। পোশাক অবিন্যস্ত। এতটাই নৃশংসতা যে দেহ শনাক্ত করার মত অবস্থায় নেই।
কার্যত সঙ্গে সঙ্গে তিনি খবর দেন বালি থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য মঙ্গলবার তা পাঠানো হয় পুলিশ মর্গে।