পারিজাত মোল্লা: শনিবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে উঠে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাখিল করা মামলা। লিপস অ্যান্ড বাউন্সের কম্পিউটার থেকে ডাউনলোড করা হয়েছে ১৬ টি ফাইল। কী আছে সেই ফাইলে? তা জানতেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সব ফাইল খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হল ফরেনসিক ল্যাবরেটরি-কে।
এদিন কলকাতা হাইকোর্ট এই নির্দেশ দিয়েছে। দুর্নীতির মামলায় তল্লাশি চালাতে গিয়ে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিক কোন ফাইল ডাউলনোড করেছেন, তা জানতে চান বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। এই ফাইল পরীক্ষার ওপরেই নির্ভর করবে অভিষেকের করা অপর একটি মামলার রায়।
ইডি-র এফআইআর থেকে অব্যাহতি চেয়ে মামলা করেছিলেন অভিষেক। শনিবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি ঘোষ জানিয়েছেন,-‘ এই রিপোর্ট পাওয়ার পরই ঘোষণা করা হতে পারে রায়’। তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী কিশোর দত্ত এদিন সওয়াল-জবাব পর্বে জানান , -‘ গত ২১ অগস্ট রাতভর তল্লাশি চলে। অফিসেই ছিলেন ইডি আধিকারিকরা। সেখান থেকেই ১৬ টি ফাইল ডাউনলোড করা হয়েছে।
লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থায় সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের পাশাপাশি অভিষেক কী পদে আছে সেটা কেন জানানো হল? এর কি কোনও প্রয়োজনীয়তা ছিল? এটা কি বিদ্বেষমূলক আচরণ নয়?’নতুন বা অজানা ১৬টি ফাইল ডাউনলোড করা হয়েছে বুঝতে পারার পরই জিডি করা হয়। এরপর ২৬ অগস্ট ইডি-র তরফে চিঠি দিয়ে জানানো হয় একজন আধিকারিক নিজের মেয়ের জন্য হস্টেল সংক্রান্ত বিষয় সার্চ করেছিলেন। অভিষেকের তরফে আদালতে দাবি করা হয়েছে, অর্থ তল্লাশির নামে দেখনদারি চলে। তল্লাশির সময় কতটা মনোযোগ ছিল? সেই প্রশ্নও উঠেছে।ওই অফিসারের আচরণ অপেশাদার ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। বিচারপতির প্রশ্ন, “উনি কি ইডির স্থায়ী অফিসার নাকি ডেপুটেশনে ছিলেন?”
উত্তরে ইডি জানায়, “অরিজিনাল অফিসার।” একথা শুনে বিচারপতি ঘোষ বলেন, “খুবই দুর্ভাগ্যজনক।”বিচারপতি বলেন, শুনানির প্রয়োজন নেই অযথা। ফরেনসিক ল্যাব পরীক্ষা করে দেখবে ওই ফাইলে কী আছে। ফাইল যদি না খোলে তখন ডাউনলোড করবে লালবাজারের সাইবার শাখা। ইডি অফিসার মিথিলেশ কুমার মিশ্র এবং পুলিশ অফিসার অমিতাভ সিনহা রায়কে সিএফএসএল থেকে রিপোর্ট সংগ্রহ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
ইডি-র তরফে আইনজীবী বলেন, ‘ওই অফিসারের এই কাজ করাটা ঠিক হয়নি। কিন্তু এর মধ্যে কোনও দুরভিসন্ধি নেই। এখনই দেখাতে পারি ওই ফাইলে কী আছে।’ আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ইডিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মামলায় অগ্রগতি রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।