উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,জয়নগর : মাটির কলসির জায়গা দখল করে নিচ্ছে প্লাসটিকের কন্টেনার জয়নগরে নলেন গুড় বিক্রিতে। শীতকাল মানেই বাঙালির পিঠে পুলি খাওয়ার পার্বণ। পিঠেপুলি খেতে আমরা সকলেই কম বেশি ভালবাসি। তবে পিঠেপুলি খেতে গেলে আরও একটি জিনিসের আমাদের প্রয়োজন হয় তা হল খেজুর গাছের নলেন গুড়।
শীতকালেই সাধারণত পাওয়া যায় এই খেজুর গাছের নলেন গুড়। গ্রাম বাংলার দিকে খেজুর গাছে শিউলিরা সকাল বেলা হাড়ি বেঁধে দিয়ে আসে। সেই হাঁড়িতেই ফোঁটা ফোটা করে খেজুর গাছের রস পরে। এবং সেই রস জাল দিয়েই তৈরি করা হয় সুস্বাদু নলেন গুড়।খেজুরের গুড় অথবা নলেন গুড় থেকে একাধিক সুস্বাদু মিষ্টান্ন ও পিঠেপুলি তৈরি করা হয়।
এমনকি জয়নগরের সুস্বাদু মোয়া তৈরি করার জন্য এই উৎকৃষ্ট মানের নলেন গুড় ব্যবহার করা হয়। কিন্তু খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে এখনো সেই ঐতিহ্যবাহী মাটির কলসি বা হাড়ি ব্যবহার করে আসছে শিউলীরা। আধুনিক যুগে প্লাস্টিকের বিভিন্ন উপকরণের চাহিদা বৃদ্ধি পেলেও এখনো পর্যন্ত মাটির কলসির ওপর ভরসা শিউলিদের। আর শীত পড়লেই মাটির কলসি বা হাড়ির চাহিদা পূরণ করার জন্য কুমোর পাড়াতে তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। এই কটা মাস জয়নগর এলাকার মাটির কারিগরের গুড়ের কলসি তৈরি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
এ প্রসঙ্গে মোয়া ব্যবসায়ী মহাদেব দাস ও খোকন দাসের কথাই বাজারে মাটির কলসির বিকল্প হিসেবে প্লাস্টিকের কন্টেনার ব্যবহার করা হয়। তবে প্লাস্টিক কন্টেনারের নলেন গুড় বেশি দিন রাখা যায় না অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই সেটা নষ্ট হয়ে যায়। আর যদি মাটির কলসিতে নলেন গুড় রাখা হয় তাহলে তা অনেকদিন দীর্ঘস্থায়ী হয়। এবং আসল স্বাদ পেতে মাটির কলসির ব্যবহার অতুলনীয়।
তাই নলেন গুড়ের আসল স্বাদ পেতে মাটির কলসির ব্যবহার অতুলনীয়।জয়নগরের উওর দূর্গাপুর কুমার পাড়ার নিখিল পাল নামে এক কুমোর বলেন,কাঁচামাল, মজুরি সহ অন্যান্য জিনিসের দাম বেড়ে চলায় মাটির জিনিসের চাহিদা কমে গেছে।তাছাড়া মাটির কলসিতে নলেন গুড় ভালো থাকলেও এক একটা কলসির দাম অনেক হয়ে যাওয়ায় অনেক মোয়া ব্যবসায়ীরা পিছিয়ে আসছে।আর প্লাসটিকের কন্টেনারে নলেন গুড় বিক্রি করছে।