শেখ জামাল, ঘাটালঃ ঝাড়গ্রাম থেকে কলকাতা ফেরার পথে হেলিকপ্টারে করে ঘাটালের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি ঘুরে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ ঘাটালে নেমে বন্যার জলে দাঁড়িয়েই পরিস্থিতি নিয়ে কথা বললেন জেলা শাসক পুলিশ সুপারের সঙ্গে ৷ এরপর ফের ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ করলেন৷ পুনরায় কেন্দ্রীয় সেচ দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে দিল্লি পাঠাচ্ছেন রাজ্যের মন্ত্রী বিধায়কের দলকে৷
মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম থেকে ফেরার পথে হেলিকপ্টারে করে ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করে বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ ঘাটাল শহরে নামেন তিনি৷ অনুকূল ঠাকুরের আশ্রম সংলগ্ন মাঠে হেলিকপ্টারে করে নেমে আশ্রমে ঠাকুরকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন৷ পরে সেখান থেকে সড়কপথে এক কিলোমিটার দূরে ঘাটাল শহরের আটগোড়া এলাকায় হাজির হন৷ সেখানে রাজ্যসড়ক জলের তলায় ডুবে রয়েছে৷ বহুবাড়ি ডুবে রয়েছে৷ ওই স্থানে উপস্থিত বেশ কিছু বন্যা দুর্গত ও মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য ও ত্রান সামগ্রী তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এরপর কিছুটা জলে নেমে ডুবে থাকা বাড়িগুলির পরিস্থিতি দেখার চেষ্টা করেন৷
সেখানে জলে দাঁড়িয়েই জেলা শাসক ডাঃ রেশমী কমল, পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার, সাংসদ দীপক অধিকারী ও বিধায়ক জুন মালিয়ার সঙ্গে কথা বলেন কিছুক্ষণ৷ পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, হেলিকপ্টারে করে আসার সময় প্রায় ৭ কিমি এলাকা জলে ড়ুবে রয়েছে দেখলাম৷ ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের যারা কাজ করছেন তাদের ধন্যবাদ৷ তাদের আরও কাজ করতে হবে৷ আমি পরিস্থিতি দেখে যাচ্ছি৷ একটা রিপোর্ট তৈরি করব৷ এই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে বারবার বলার পরেও কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রকল্পটি অনুমোদন করছে না কেন্দ্র সরকার ৷ ছোটবেলা থেকেই যে কেলেঘাই কপালেস্বরী নদীর বন্যা শুনেছিলাম। নিজেদের সাতশো কোটি টাকা খরচ করে সেই কাজ করেছি৷ এখন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান ছাড়াও দিঘা সৈকত ও সুন্দরবনকে রক্ষা করতে হবে৷ এজন্য মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঞা, শিউলি সাহা, জুন মালিয়া, শ্রীকান্ত মাহাতো, সৌমেন মহাপাত্রকে দিল্লি যেতে বলছি৷ সেখানে গিয়ে কেন্দ্রীয় সেচমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিতে আর্জি দেবেন৷ সেই সঙ্গে লোকসভা ও রাজ্য সভার সাংসদদের বিষয়টি নিয়ে পার্লামেন্টে আলোচনার জন্য বলছি৷
তিনি আরও বলেন, এখন কয়েক বছরই আমফান, ইয়াশ, বুলবুল, আয়লা, কোভিড -এর মতো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে৷ তারপর আবার ম্যান মেড বন্যা করা হচ্ছে ৷ তাই সেই বন্যা আটকাতে ২৮০০ কোটি টাকা খরচ করে দামোদরের নিম্ন-অববাহিকা এলাকায় একটি প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে৷ ঘাটালের পরিস্থিতি যথেষ্ঠ ভয়াবহ৷ ১৯ জন মারা গিয়েছে৷ তাদের আর্থিক ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা হচ্ছে৷ বাকি ব্যবস্থা নিতে বলেছি প্রশাসনকে৷ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকেও সহযোগিতা করে এগিয়ে আলতে অনুরোধ করা হচ্ছে এই মুহূর্তে মানুষের পাশে দাঁড়াতে৷ সবাইকে বলব, কোনও ভেদাভেদ না করে সকলকে সহযোগিতা করুন৷