পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: দেশজুড়ে বিদ্বেষের আবহে সৌহার্দ্যের অনন্য নজির গড়ল তেলঙ্গানা। রাজ্যের সচিবালয় কমপ্লেক্সে একযোগে মন্দির, মসজিদ, গির্জা স্থাপন করে সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত গড়ল কেসিআর প্রশাসন।
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল গণ্যমান্য নেতৃত্বদের সালাম জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও বলেন, আল্লাহর দরবারে দাঁড়িয়ে কিছু বলতে ভয় লাগে। তবুও বলছি, রাজ্যে সাম্প্রদায়িক ঐক্য ও শান্তি বজায় রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছে তার সরকার। সমগ্র দেশের কাছে সম্প্রীতির এক অনন্য নজির গড়ল তেলেঙ্গানা
এদিন তিনি আরও বলেন, আমরা দোয়া করি সংশ্লিষ্ট রাজ্যে সর্বদা সকলের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকুক। পুর্ববৎ মসজিদটি নিজামের শাসনামলে প্রথম নির্মাণ করা হয়েছিল। এখন সেটাকে নয়া রূপ ও সাজ দেওয়া হয়েছে।
মন্দির, মসজিদ, গির্জা নির্মাণ করে আমরা সমগ্র ভারতবাসীকে এই বার্তা দিতে চাই যে এই ভাবেও জীবন নির্ধারণ করা যায়। ‘তিন ভাই’ অর্থাৎ হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান একত্রে কাজ করতে পারে, প্রার্থনা করতে পারে।
মসজিদের উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেহমুদ আলি, মুখ্য সচিব সন্থী কুমারী, এআইএমআইএম সভাপতি ও হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি, তেলেঙ্গানা বিধানসভায় মিম বিধায়ক আকবরউদ্দিন ওয়াইসি সহ ধর্মীয় নেতারা। এর ঠিক আগে রাজ্যপাল ও কেসিআর মন্দির ও গির্জার উদ্বোধন করেন। শুরুতেই তারা নল্লা পোচাম্মা মন্দিরে আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নেন । রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীও কেক কেটে গির্জা উদ্বোধন করেন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে রাজ্যের পুরানো সচিবালয় ভবন ভাঙার সময় দুটি মসজিদ, একটি মন্দির ও গির্জা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও। সেই সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া মন্দির এবং দুটি মসজিদ সরকারি খরচে পুনর্নির্মাণ করা হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন তিনি। তখনই খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের তরফেও নতুন সচিবালয়ে গির্জা করার দাবি উঠেছিল। তারপরেই নতুন সচিবালয়ে মন্দির, মসজিদ, গির্জা নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন রাজ্য প্রশাসন।
গত মাসে কেসিআর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানান, সমস্ত ধর্মের সমতার নীতি এবং সংবিধানে নিহিত ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার প্রতিফলন অনুসারে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁর সরকার। কোভিড-১৯ সংক্রমণের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কাজ শুরু হতে কিছুটা দেরি হলেও তা এখন সম্পন্ন হয়েছে। খুব শীঘ্রই ধর্মীয় স্থান গুলি সর্বসমক্ষে খুলে দেওয়া হবে, যা ‘গঙ্গা যমুনা তেহজীব’ বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ভিত্তিপ্রস্তরকে আরও প্রসস্থ করবে। মসজিদ দুটি ৭৫০ বর্গফুট জমির ওপর গড়ে উঠেছে। রয়েছে ইমামদের কোয়ার্টার।