পুবের কলম প্রতিবেদক, কাঁথি: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথির তিন নম্বর ব্লকের দেশপ্রাণ মহাবিদ্যালয় পরিচালনায় বেনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির যে অভিযোগ তৃণমূল ছাত্র সংসদ তুলেছিল তাতেই সিলমোহর দিল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নিয়োগ করা বিশেষজ্ঞ তদন্তকারী সংস্থা। শুধু অভিযোগের সত্যতা স্বীকার নয়, আরও বৃহত্তর তদন্তের সুপারিশ করল এই তদন্তকারী সংস্থা। স্বাভাবিক কারণেই এর জেরে সমস্যায় পড়তে পারেন তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। কারণ দীর্ঘদিন ধরেই এই কলেজের পরিচালন কমিটির সভাপতি ছিলেন দিব্যেন্দু অধিকারী। ছাত্ররা কলেজে হওয়া এই বেনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির জন্য অভিযোগের আঙুল তুলেছিল দিব্যেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে। তদন্তকারী সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, এ ব্যাপারে তাঁরা একটি লিখিত রিপোর্ট রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তর এবং কাঁথির মহকুমা শাসক আদিত্য বিক্রম হিরানির কাছে পাঠিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে দেশপ্রাণ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুবিকাশ জানাকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। কলেজের প্রশাসক তথা কাঁথির মহকুমা শাসক আদিত্য বিক্রম মোহন হিরানি জানিয়েছেন রিপোর্ট তিনি এখনও দেখেনি।
অপরদিকে দেশপ্রাণ মহাবিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির প্রাক্তন সভাপতি তথা তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী বলেন, কেউ অভিযোগ করতে পারে। তার তদন্ত হতে পারে। তদন্তে যদি কেউ দোষী প্রমাণিত হন তার আইন অনুযায়ী শাস্তি হবে।
কলেজের দুর্নীতি নিয়ে ছাত্রসংগঠনের পক্ষ থেকে বারবার অভিযোগ করা হয়েছে কাঁথি দেশপ্রাণ মহাবিদ্যালয়ের অতিথি শিক্ষকদের স্থায়ীকরণ, কলেজের নতুন ভবন নির্মাণ এবং আসবাবপত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। তাঁরা অভিযোগ করেছেন দিব্যেন্দু অধিকারী পরিচালন কমিটির সভাপতি থাকাকালীন এই দুর্নীতি গুলিই নাকি হয়েছে।
সূত্র মারফত জানা গেছে, তদন্তকারী সংস্থার দেওয়া তিন পাতার রিপোর্টে সেই অভিযোগগুলিকেই মান্যতা দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে ছাত্রদের থেকে পাওয়া অভিযোগের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তৈরি করা তদন্ত কমিটির সামনে কলেজের অধ্যক্ষ সুবিকাশ জানা সহ এক ঠিকাদার এবং দশ জন অতিথি শিক্ষককে মুখোমুখি হতে হয়। তাঁদের বয়ান নথিভুক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিযুক্ত তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কমিটির এই রায় সামনে আসার পরেই তৃণমূল ছাত্র সংগঠন এবং তৃণমূল নেতৃত্ব দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে আন্দোলনে নেমে পড়েছে। দোষীরা যাতে অবিলম্বে শাস্তি পায় তার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীসহ প্রশাসনের কাছে দরবার করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক। ফলে দেশপ্রাণ মহাবিদ্যালয়ের বেনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতিকে ঘিরে এবার চাপ বাড়তে শুরু করেছে কাঁথির অধিকারী বাড়ি তথা “শান্তিকুঞ্জে”।