পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : কলঙ্কিত মাতৃত্ব। নিজের ৪ বছরের শিশুসন্তানকে গোয়ার হোটেলে খুন করে ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে পালানোর সময় ধৃত মা। কর্নাটকের চিত্রদূর্গ থেকে ওই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ধৃত ৩৯ বছর বয়সী উচ্চশিক্ষিতা মহিলার নাম সূচনা শেঠ। সূচনা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো। ডেটা গবেষক হিসেবে তাঁর ১২ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। সূচনা আর্টফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সি’র (এআই) ১০০ জন বুদ্ধিমতী মহিলার মধ্যে ছিল একজন। সূচনা পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি টেক কনসালটেন্সি ‘দ্য মাইন্ডফুল এআই ল্যাব’-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও। স্টার্টআপ শিল্পে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ম্যাসাচুসেটসের বোস্টনে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির বার্কম্যান ক্লেইন সেন্টারে একজন ফেলো ছিলেন। একজন প্রভাবশালী মহিলা কিভাবে এই ধরনের কাণ্ড ঘটালেন তা নিয়ে হতবাক পুলিশ।
জানা গেছে, সূচনা শেঠের বিয়ে হয়েছিল ২০১০ সালে। ২০১৯ সালে তিনি এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু ২০২০ সাল থেকেই স্বামী-স্ত্রীয়ের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। পরে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তবে আদালত নির্দেশ দেয়, প্রতি রবিবার সন্তানের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন বাবা।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত শনিবার ৪ বছরের ছেলেকে নিয়ে উত্তর গোয়ার ক্যান্ডোলিমে একটি হোটেলে এসে ওঠেন সূচনা শেঠ। সোমবার চেক আউট করেন তিনি। পরে হোটেলের এক কর্মী সূচনা যে ঘরে ছিলেন সেই রুমে পরিষ্কার করতে গিয়ে দেখেন সেখানে চাপ চাপ রক্ত পড়ে আছে।
হোটেল কর্তৃপক্ষ গোয়া পুলিশকে বিষয়টি জানালে, ক্যালাঙ্গুট থানার একটি দল ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায়। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজে দেখে, সূচনা হোটেল থেকে বের হওয়ার সময় তার সঙ্গে ছেলে ছিল না। হাতে ছিল একটি বড় ব্যাগ।
পুলিশকে হোটেলের কর্মীরা জানান, সূচনা হোটেলেরই এক কর্মীকে একটি ট্যাক্সি ডেকে দিতে বলেন বেঙ্গালুরু যাওয়ার জন্য। হোটেলকর্মীরা তাঁকে বিমান ধরার পরামর্শ দিলেও তিনি ট্যাক্সি ধরে দেওয়ার উপরই জোর দেন। এরপর ট্যাক্সি এলে ওই মহিলা বড় ব্যাগ নিয়ে একাকী হোটেল থেকে বেরোন।
মোবাইলের মাধ্যমে পুলিশ সূচনার সঙ্গে কথা বলে জিজ্ঞাসা করে, তিনি কোথায় যাচ্ছেন, তার ছেলে কোথায়। জবাবে সূচনা জানান, গোয়ার ফর্তোদায় তাঁর এক বন্ধুর কাছে ছেলে রয়েছে। পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে সূচনা একটি ভুয়ো ঠিকানা দেন। পুলিশ ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করে সূচনার গন্তব্য বুঝতে পারেন। গোয়া পুলিশ ওই ট্যাক্সিচালককে নিকটবর্তী থানায় গাড়ি নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই মতো ওই চালক বেঙ্গালুরুর চিত্রদূর্গ থানায় গাড়ি নিয়ে যায়। ততক্ষণে গোয়া পুলিশ চিত্রদূর্গ থানায় যোগাযোগ করেছে। কর্নাটক পুলিশ সূচনা শেঠকে গ্রেফতার করে। সূচনার ব্যাগে তল্লাশি চালিয়ে ছেলের নিথর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।