পুবেরকলম প্রতিবেদকঃ উত্তরপ্রদেশের সীতাপুরের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার মামলায় অল্ট নিউজের সহ প্রতিষ্ঠাতা এবং ফ্যাক্টচেকার মুহাম্মদ যুবায়েরের অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ বাড়িয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে সীতাপুর মামলায় যুবায়ের সাময়িক স্বস্তি পেলেও তাঁকে এখন জেলেই থাকতে হচ্ছে। কারণ তাঁর বিরুদ্ধে দিল্লি এবং লখিমপুরখেরির ঘৃণা ছড়ানোর মামলা ঝুলেই রয়েছে। যুবায়েরের আইনজীবী কলিন গণজালভেস সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন। কারণ উত্তরপ্রদেশের একটি আদালত তাঁকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। আইনজীবী গণজালভেস বিচারপতি ই¨ইন্দিরা ব্যানার্জি এবং বিচারপতি জে কে মাহেশ্বরীর অবকাশকালীন বেঞ্চে আবেদন জানিয়ে অবিলম্বে শুনানির আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে অবকাশকালীন বেঞ্চ যুবায়েরকে সীতাপুর মামলায় পাঁচদিনের অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছিল। সোমবার বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি এএস বোপান্নার নিয়মিত বেঞ্চ অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ আদালতের পরবর্তী নির্দেশ দেওয়া পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে। মুহাম্মদ যুবায়েরের আবেদনের ভিত্তিতে সীতাপুর মামলায় সুপ্রিম কোর্ট উত্তরপ্রদেশ সরকারকে তাদের জবাব দায়ের করার জন্য চার সপ্তাহের সময় দিয়েছে। তারপর দু’সপ্তাহের মধ্যে পাল্টা হলফনামা দায়ের করতে হবে বাদীপক্ষকে। মামলাটির পরবর্তী শুনানি হতে পারে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর। সীতাপুর মামলায় যুবায়েরের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযোগ ছিল তিনি ইয়েতি নরসিংহান¨, বজরং মুনি এবং আন¨স্বরূপের মতো ধর্মীয় নেতাদের ‘ঘৃণার কারবারি’ বলে ট্যুইটে অভিহিত করেছিলেন। এই তিনজন হিন্দুধর্মীয় নেতার বিরুদ্ধে ঘৃণা ভাষণ ছড়ানোর পুলিশি অভিযোগ রয়েছে। দিল্লি এবং লখিমপুরখেরিতে যুবায়েরের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। যুবায়েরকে দিল্লি পুলিশ গত ২৭ জুন একটি চার বছর আগের করা ট্যুইটের জন্য গ্রেফতার করে। তারপর তিনি বিজেপির প্রাক্তন মুখপাত্র নূপুর শর্মার পয়গম্বর হজরত মুহাম্মদ সা.-র বিরুদ্ধে এক অবমাননাকর ভিডিয়ো প্রকাশ করেন। লখিমপুরখেরির মামলায় পুলিশের অভিযোগ, তিনি সুদর্শন চ্যানেলের একটি অনুষ্ঠান নিয়ে ‘বিভ্রান্তিমূলক’ ট্যুইট করেছিলেন। যুবায়েরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিল আশিস কাটিয়ার নামক সুদর্শন নিউজ চ্যানেলের এক কর্মী এবং হিন্দুত্ববাদী নেতা। লখিমপুরখেরির এক আদালত যুবায়েরকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠায়।
এদিকে দিল্লির মামলায় মঙ্গলবার যুবায়েরের জামিনের আবেদনের শুনানি কিছুক্ষণ চলার পর আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত স্থগিত করে দিয়েছে দিল্লির আদালত। যুবায়েরের আইনজীবী বৃ¨া গ্রোভার সওয়াল করতে গিয়ে আদালতকে বলেন, তাঁর মক্কেলের ট্যুইটের জন্য গত চার বছরে কোনও দাঙ্গা-হাঙ্গামা হয়নি। যুবায়ের ২০১৮ সালে ১৯৮৩ সালের এক ছবির দৃশ্যের স্ক্রিনশট ট্যুইট করেছিলেন। পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল যুবায়েরের ট্যুইটের ফলে মানুষের ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে। যার ফলে শান্তি বিঘ্নিত হতে পারত। এদিন যুবায়েরের আইনজীবী বলেন, ট্যুইটের চার বছর অতিক্রান্ত হলেও কোথাও কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি। এই সময় সরকারি আইনজীবী অতুল শ্রীবাস্তব আদালতকে বলেন, পুলিশ কিছু সময় চাইছে। তাই এই মামলার শুনানি করা হোক আগামী বৃহস্পতিবার। তবে আপত্তি জানান আইনজীবী গ্রোভার। তিনি বলেন, সরকারপক্ষ জেনেশুনে দেরি করার কৌশল নিয়েছে। এভাবে জামিন আটকে রাখা যায় না। সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে রায় দিয়েছে সোমবার। কিন্তু দিল্লির আদালত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করে।