উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, কুলতলি : বছরের শেষে মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফিরলো সুন্দরবনের এক মউলে।গত বুধবার সুন্দরবনের মৈপীঠ উপকূল থানার গুড়গুড়িয়া ভুবনেশ্বরী গ্রাম পঞ্চায়েতের পয়লা ঘেরি গ্রামের তপন খাঁড়া নামে এক মউলে জয়দেব খাঁড়া,গনেশ খাঁড়া, গুরুপদ খাঁড়া ও বাসুদেব মন্ডলকে সাথে নিয়ে সুন্দরবনের আজমমালীর জঙ্গলে যায় মধু সংগ্রহ করতে।
আর শনিবার সকালে জঙ্গলে মধু সংগ্রহের সময় পিছন থেকে আচমকা একটি বাঘ তপনের ঘাড়ের ওপর পড়ে তাকে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যেতে চাইলে তাঁর সাথে থাকা সঙ্গীরা বাঘের সাথে লড়াই করে বাঘের মুখ থেকে তপন খাঁড়া(৫৯)কে জীবিত অবস্থায়ই ফিরিয়ে আনে। বাঘটি আচমকা আক্রমনের ভয়ে মুখের খাবার ফেলে পালিয়ে যায়। আর এদিকে গুরুতর আহত তপনকে নিয়ে এসে প্রথমে জয়নগর কুলতলি গ্রামীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।বন দফতর ও আহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ শে মার্চ বন দফতরের রায়দীঘি রেঞ্জের কুলতলির নলগোড়া বিট অফিস থেকে মহুল পাশ নিয়েছিলো তপন সহ একাধিক মউলেরা।আর সেই পাশ নিয়েই গত বুধবার তাঁরা জঙ্গলে যায় মধু সংগ্রহ করতে। আর তাঁর পরেই এই দুর্ঘটনা ঘটে গেল।একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী এ বছর জানুয়ারি থেকে এখনো পর্যন্ত সুন্দরবনে বাঘের আক্রমনে মৃত্যু ঘটেছে চারজন মৎস্যজীবির। আর আহত হয়েছেন দুজন।তাঁর মধ্যে একজন মৎস্যজীবি ও একজন মউলে।
সুন্দরবনের বাঘের আক্রমনে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে থেকে দীর্ঘ দিন ধরে লড়াই করে চলেছে এপিডিআর নামে একটি মানবাধিকার সংগঠন। আর সেই সংগঠনের দক্ষিন ২৪ পরগনা জেলার সহ সম্পাদক মিঠুন মন্ডল এদিন বলেন, সুন্দরবনে বাঘের সাথে লড়াই করে জীবন জীবিকা চালিয়ে যাচ্ছে সুন্দরবনের বহু গরীব মানুষ।
বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় আজ জীবন হাতে নিয়ে তাঁরা জঙ্গলে যাচ্ছে। আর ক্রমাগত ক্ষতির মুখে পড়ছে।সরকারি মহুল পাশ নিয়ে জঙ্গলে গিয়েছিলো তপন খাঁড়া সহ চার জন মউলে।তাই অবিলম্বে সরকারের মউলের পাশে এসে দাঁড়ানো উচিত।
আমাদের দাবি -১) চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব বিনামূল্যে সরকারি ভাবে করতে হবে।২) গুরুতর আহতদের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের জয়েন্ট সেক্রেটারির ২০১৮ সার্কুরাল অনুযায়ী ২ লক্ষ টাকা ক্ষতি পূরণ দিতে হবে।৩) আহতদের সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সংসার চালানোর সমস্ত দায়িত্ব সরকারি কে নিতে হবে।নাহলে এদের পাশে থেকে আমাদের আন্দোলন চলবে।