পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ইউপিএসসিতে মুসলিমদের সাফল্য নিয়ে প্রতি বছরই কাটাছেঁড়া হয় দেশে। বছরখানেক আগে আইএএস-এ সফল মুসলিমদের সংখ্যা সামান্য বেশি হওয়ায় একে ‘ইউপিএসসি জিহাদ’ বলে দেগে দিয়ে বিদ্বেষ ছড়িয়েছিল সুদর্শন টিভি। চলেছিল প্রপাগান্ডা। অনেক মুসলিমও মনে করেন, সংখ্যা অনুপাতে দেশের অন্যতম কঠিন সর্বভারতীয় পরীক্ষায় মুসলিমদের সাফল্য খুব একটা বেশি নয়। তারপরও প্রতি বছর যে সামান্য সংখ্যক মুসলিম পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়, তা নিয়েই বেশ হইচই বেঁধে যায়।
গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান বলছে, ইউপিএসসিতে মুসলিমদের সাফল্যের হার খুবই কম। এই নিয়ে সন্তোষ প্রকাশের কিছু নেই। ২০২২ সালের ইউপিএসসির ফল বেরিয়েছে কিছুদিন আগেই। সেখানে মোট ৯৩৩ জন পরীক্ষার্থী আইএএস, আইপিএস, আইএফএস, আইআরএস-এর জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন। এর মধ্যে মুসলিম মাত্র ২৯ জন। শতাংশের বিচারে তা মাত্র ৩.১ শতাংশ।
২০১৬ সালে ১০৯৯ জন উত্তীর্ণের মধ্যে সফল মুসলিমের সংখ্যা ছিল ৫২ অর্থাৎ, ৪.৭৩ শতাংশ। ২০১৭ সালে ৯৮০ জনের মধ্যে মুসলিম ছিল ৫০ জন অর্থাৎ, ৫.১ শতাংশ। ২০১৮ সালে ৭৫৯ জনের মধ্যে মাত্র ২৮ জন মুসলিম সফল হয়। শতাংশের বিচারে ৩.৬৮ শতাংশ। ২০১৯ সালে মুসলিমদের সাফল্যের হার বেড়েছিল সামান্য। ৮২৯ জনের মধ্যে ৪৪ জন মুসলিম সফল হয় অর্থাৎ, ৫.৩ শতাংশ। ২০২০ ও ২০২১ সালে মুসলিমদের সাফল্যের হার কমে হয় যথাক্রমে ৪.০৭ ও ৩.৬৪।
পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট, গত তিন বছরে ধারাবহিকভাবে মুসলিমদের সাফল্যের হার নিম্নগামী। মুসলিমদের এই সাফল্য গত সাত বছরে ৩-৫ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। কখনই এর গণ্ডি অতিক্রম করতে পারেনি।
দেশে মুসলিমদের সংখ্যা অনুপাতে এই সাফল্য সামান্যই বলা চলে। তবে এই সামান্য সাফল্যও আগে দেখা যেত না। জামিয়া মিল্লিয়া ইসলামিয়া, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়, জামিয়া হামদর্দ-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলি কোচিংয়ের ব্যবস্থা করায় একটু একটু করে সাফল্য ধরা দিচ্ছে বলে অনেকে মনে করছেন।
মুম্বই হজ কমিটি, দেশের বেশকিছু মসজিদ কমিটিও আইএএসের প্রস্তুতির ব্যবস্থা করেছে। এভাবেই সাফল্য আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, ইউপিএসসি জিহাদের মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে কি মুসলিমদের সাফল্যকে দাবিয়ে রাখা হচ্ছে, এমন প্রশ্নও উঠছে।