পুবের কলম প্রতিবেদক: বেআইনিভাবে পুকুর ভরাট বন্ধ করতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়ে আগেও পুরসভার তরফে চিঠি পাঠানো হয়েছিল কলকাতা পুলিশকে। তারপরেও পুলিশের নাকের ডগা দিয়ে একের পর এক ট্রাকে করে আর্বজনা নিয়ে গিয়ে বেআইনিভাবে পুকুর বোজানোর কাজ চলছিল বলে অভিযোগ পেয়েছিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এবার নিজেই রাস্তায় নেমে রাবিশ বোঝাই ট্রাক আটকালেন মেয়র।
জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে চেতলার বাড়ি থেকে বেরিয়ে ডায়মন্ড হারবার রোড ধরে যখন তিনি বোরো ষোলোতে প্রশাসনিক বৈঠক করতে যাচ্ছিলেন তখনই রাস্তায় বিষয়টি নজরে পড়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের। তিনি লক্ষ্য করেন, কিছু পুরাতন গাড়ি রাবিশ বোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছে। এই গাড়িগুলির নম্বর প্লেটও সঠিক বলে মনে হয়নি তাঁর। শুধু তাই নয়, গাড়িগুলির পলিউশন সার্টিফিকেটও নেই বলে সন্দেহ হয় মেয়রের। এরপরেই তিনি তাঁর সিকিউরিটিদের নিয়ে রাস্তায় গাড়িগুলিকে দাঁড় করান এবং সিকিউরিটির মাধ্যমে গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চান এবং কোথায় মাল নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তা জিজ্ঞাসাবাদ করেন। গাড়ির চালকের কথাবার্তা শুনে তাঁর সন্দেহ হলে তিনি নিকটবর্তী পুলিশ স্টেশনে ফোন করে বিষয়টি জানান।
কিভাবে কলকাতা পুলিশের নাকের ডগা দিয়ে এই ধরনের অবৈধভাবে রাবিশ বোঝাই ট্রাক যাতায়াত করছে তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে এদিন মেয়র বলেন, “এইভাবে যদি আমাদের একা পলিউশনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়, পুকুর বোজানোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়, এটা তো অসম্ভব। পুলিশ কমিশনারকে বলব, মাঝেরহাট ব্রিজ থেকে কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করুন। তাহলে এই অঞ্চলে জয়াশয় বোজানোর পুরনো রোগ আটকানো যাবে।” তিনি আরও বলেন, “পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দেওয়ার পরেও একটা গাড়ি মাঝেরহাট ব্রিজে আমি ধরলাম। ট্র্যাফিক পুলিশ নিয়েছে গাড়িটা। এখান থেকে রাবিশ সাউথের দিকে চলে আসছে। তারপর আরও চার পাঁচটা গাড়ি দেখলাম সাউথের দিকে যাচ্ছে। নম্বরগুলো আমাদের কাছে আছে। আমি পুলিশ কমিশনারের কাছে দেব।”
প্রসঙ্গত, শহরে বহু পুরনো বাড়ি ভেঙে অনেক জায়গাতেই তৈরি হচ্ছে বহুতল। পুরনো বাড়ির এই ভাঙা আর্বজনা পুকুরে ফেলার প্রবণতা রয়েছে একাংশের। এই ধরনের প্রবণতা রুখতে এবং পুকুর বোজানো ঠেকাতে ইতিমধ্যেই বিশেষ প্লান্ট বানিয়েছে পুরসভা। এই প্লান্টের উল্লেখ করে ফিরহাদ আরও বলেন, “আমরা সিএনডি প্লান্ট বসিয়েছি। কেউ বাড়ি ভাঙলে সেখানে আর্বজনা ফেলবে। তারপরেও এতগুলো আবর্জনার গাড়ি দক্ষিণ কলকাতার ভেতরে ঢুকছিল কী করে?” বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকেও জানাবেন বলে জানিয়ে ফিরহাদ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীকে নিশ্চয়ই বলব, তবে মুখ্যমন্ত্রীরও কিছু করার থাকবে না, যদি গ্রাউন্ড অ্যাক্টিভিটিস না থাকে।”