আইভি আদক, হাওড়া: পার্লামেন্ট-কান্ডে প্রত্যক্ষভাবে দায়ী বিজেপি। এই ঘটনায় যে বিজেপি সাংসদ পাস দিয়েছিলেন ওই সাংসদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়ের। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ সহ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কুরুচিকর মন্তব্যের প্রতিবাদে রবিবার সকালে মধ্য হাওড়া তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে এক প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিয়ে মন্ত্রী অরূপ রায় ওই মন্তব্য করেন।
পার্লামেন্ট-কান্ডে ললিত ঝায়ের নাম উঠে আসা এবং তাঁর সঙ্গে কলকাতা-যোগ ও ললিতের সঙ্গে তৃণমূল-যোগ রয়েছে বলে শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ প্রসঙ্গে এদিন অরূপ রায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, এই ধরনের কাজের সঙ্গে তৃণমূল যুক্ত থাকেনা। আর এটা তো পরিষ্কার হয়েই গেছে যে এই পাস দিয়েছেন যিনি তিনি বিজেপিরই একজন সাংসদ। সেই পাস নিয়েই এরা পার্লামেন্টে ওইদিন ঢুকেছিল। এবং তারাই এই কান্ড ঘটিয়েছে। এই ঘটনায় তাদেরকেই প্রত্যক্ষভাবে আমরা দায়ী করছি। এবং অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। যিনি পাস দিয়েছিলেন সেই সাংসদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
ললিত ঝায়ের সঙ্গে কলকাতার নেতাদের ছবি প্রসঙ্গে অরূপ রায় বলেন, কারও ছবি থাকতেই পারে। এখন সকলের হাতেই অ্যান্ড্রয়েড ফোন। যে কেউ কোনও নেতার পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতেই পারে। এটা এইভাবে অভিযোগ তোলা যায়না। নতুন সংসদ ভবনের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে এদিন অরূপ রায় বলেন, সংসদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন। আরও শক্তপোক্ত হওয়া উচিত। এতো আলগা সিকিউরিটির জন্যই এমন ঘটনা ঘটে গেল। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের পরিকল্পনা ছিল গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার। সুতরাং এটা ভারতবর্ষের খুব লজ্জার।
মহুয়া মৈত্রকে বহিষ্কার প্রসঙ্গে মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, লক্ষ লক্ষ কোটি ভারতবর্ষের টাকা যেখানে লুট হয়ে যায়, বিদেশে চলে যায় তখন কেন্দ্রীয় সরকার চুপ করে বসে থাকে। আর মহুয়া মৈত্র যেহেতু স্পষ্টবাদী স্পষ্ট বক্তা তাঁকে কেন্দ্রীয় সরকার ভয় পায়। বিনা কারণে তাই মহুয়া মৈত্রকে বহিষ্কার করা হলো। মহুয়া মৈত্র এমন কিছু অন্যায় কাজ করেননি যে তাঁকে বহিষ্কার করা হলো। আমরা নিশ্চিত যেকথা আমাদের নেত্রীও বলেছেন মহুয়া মৈত্র দ্বিগুণ ভোটে জিতবেন।
এর পাশাপাশি এদিনের কর্মসূচি প্রসঙ্গে অরূপ রায় বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার বিরুদ্ধে আমাদের লাগাতার কর্মসূচি চলছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দিল্লিতে আন্দোলন হয়েছে। রাজভবনের সামনে লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়েছে। অত্যন্ত সফল কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এখনো কেন্দ্রীয় সরকার কোনও সাড়াশব্দ করেনি। মহুয়া মৈত্রকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ। জব কার্ড হোল্ডারদের টাকা কেন্দ্রীয় সরকারকে অবিলম্বে দিতে হবে। আবাস যোজনার টাকা দিতে হবে। এবং বকেয়া ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রীয় সরকারকে অবিলম্বে দিতে হবে। যতদিন না এই বঞ্চনা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে ততদিন আমাদের এই আন্দোলন চলবে।
প্রসঙ্গত, শিবপুর ট্রামডিপো মোড়ে জমায়েতের পর এদিন শুরু হয় মিছিল। শ্যামল মিত্র, সুশোভন চট্টোপাধ্যায়, সুরজিৎ সাহা, মৃণাল দাস সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ মিছিলে পা মেলান।