পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: বাবা ইমাম। স্থানীয় একটি মসজিদে সামান্য বেতনে ইমামতি করেন। কষ্টের সংসার। তাঁর মেয়েরাই মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষায় ‘তুখড় রেজাল্ট’ করেছে। খবরটি পেয়ে যেন খুশির হাওয়া বয়ছে ইমামের ছোট্ট ঘরে। আবেগে গলা বুঁজে যাচ্ছে যমজ দুই বোনেরও। নাম সৈয়দ বিশমাহ ও সৈয়দ সাবিয়া। কাশ্মীরের কুলগাম জেলার দামহাল হানজিপোরার বাসিন্দা তাঁরা। বিশমাহ ও সাবিয়া তাঁদের প্রথম প্রচেষ্টাতে এই সাফল্য অর্জন করেছে। যথাক্রমে ৬২৫ ও ৫৭০ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে যমজ দুই বোন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে দুই বোন জানান, আব্বা-আম্মু’র অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলাফল এটা। সহস্র বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হয়েও দমে যায়নি তাঁরা। ভাঙতে দেননি আমাদের মনোবল। একাগ্র চিত্তে আল্লাহ তায়ালার ওপর ভরসা রাখতে বলতেন। নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে আমাদের পড়ালেখা চালিয়ে গেছেন। খামতি রাখেনি কোনও কিছুতে।
বিশমাহ ও সাবিয়ার বাবার কথায়, মেয়েদের এই সাফল্যে গর্বিত তিনি। মেয়েরা ভালো ফল করবেন সে বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন। তিনি জানান, মেয়েরা পড়াশোনায় খুব ভালো। যখন সময় পায়, তখনই পড়তে বসে যায়। বাধা ধরা কোনও সময় ছিল না। আমাদের যতই কষ্ট হোক, মেয়েদের জন্য কোনও অভাব রাখিনি। সামান্য আয়ে যতটুকু সম্ভব ওদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। বাকি সব আল্লাহর ইচ্ছা।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাতে প্রকাশিত হয়েছে ইউজিসি নিটের ফলাফল। দিন কয়েক আগেই চূড়ান্ত উত্তরপত্র প্রকাশিত হয়েছিল। এই বছর, ২০ লক্ষেরও বেশি পড়ুয়া নিট-ইউজি ২০২৩-এর পরীক্ষায় বসেছিল, যার মধ্যে ১১ লক্ষেরও বেশি পড়ুয়া পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ সময় ধরে সীমান্তবর্তী এলাকায় সন্ত্রাসের শিকার জম্মু ও কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ। কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপ পেরিয়েও মাঝেমধ্যেই সন্ত্রাসবাদী হামলায় রক্তাক্ত হয় ভূস্বর্গ। সব বাধা অতিক্রম করে সাবিয়া-বিশমাহের এহেন সাফল্য উচ্ছ্বসিত স্থানীরাও।