পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং-উনের দেওয়া উপহার নিয়ে এখন রীতিমতো বেকায়দায় দক্ষিণ কোরিয়া। না কোন মিসাইল বা ক্ষেপণাস্ত্র পাঠান নি কিম। তাহলে। ঘটনাটা হলো চারেক আগে দক্ষিণ কোরিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মু জা-ইনকে দুটি কুকুর উপহার দিয়েছিলেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। এতদিন পরে সেই কুকুর নিয়ে রীতিমতো টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিতে।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে শান্তি সম্মেলন শেষে তৎকালীন দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্টকে দুটি সাদা ‘পুংসান’ কুকুর উপহার দেন কিম জং উন। কুকুরের এই জাতটি উত্তর কোরিয়ার আদিবাসী বলে পরিচিত।
গত মে মাসে ক্ষমতা ছেড়েছেন মুন জা-ইন। সরকারি বাসভবন ছাড়ার সময় কিমের উপহার দেওয়া দুটি কুকুর ও এদের একটি বাচ্চা সঙ্গে নিয়ে যান তিনি।
কুকুরগুলোর আরও ছয়টি বাচ্চা রয়েছে। এদের সবকটিকেই দক্ষিণ কোরিয়ায় সরকারি সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু গত মার্চ মাসে দেশটির আইনে একটি সংশোধনী আনা হয়েছে। এতে প্রেসিডেন্সিয়াল উপহার যদি প্রাণী কিংবা গাছ হয়, তবে সেগুলো প্রেসিডেন্সিয়াল আর্কাইভসের বাইরে দেখভাল করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই আইনের জেরেই কিমের দেওয়া কুকুরগুলো ব্যক্তিগত বাসভবনে নিয়ে যেতে পেরেছিলেন মুন জা-ইন।
কিন্তু গত সোমবার মুনের অফিস জানিয়েছে, তারা আর কুকুরগুলোর দেখভাল করতে পারছে না। কারণ বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওলের সরকার এগুলোর খাবার ও সেবাযত্নের খরচ দিতে অস্বীকার করছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার স্বরাষ্ট্র ও নিরাপত্তা মন্ত্রক বলেছে, কুকুরগুলোকে গত মঙ্গলবার সরকারের কাছে ফেরত দেওয়া হয়েছে। সেগুলোকে ডেগু শহরের একটি পশুচিকিৎসা হাসপাতালে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
ফেসবুকে প্রকাশিত বিবৃতিতে মুনের অফিস অভিযোগ করেছে, বর্তমান প্রশাসন ‘ব্যাখ্যাতীতভাবে’ কুকুরগুলোর যত্নের জন্য সরকারি তহবিল সরবরাহে মন্ত্রকের প্রস্তাবে বাধা দিচ্ছে।
দক্ষিণ কোরীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নিশ্চিত করেছে, তারা কুকুরগুলোর জন্য মাসে ২৫ লাখ ওন (১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা প্রায়) বরাদ্দের একটি খসড়া পরিকল্পনা তৈরি করেছিল। এতে পাঁচ লাখ ওন (প্রায় ৩৭ হাজার টাকা) দেওয়া হতো কুকুরের খাবার ও চিকিৎসার জন্য এবং ২০ লাখ ওন (১ লাখ ৪৭ হাজার টাকা প্রায়) দেওয়া হতো তাদের দেখভালে কর্মী নিয়োগের জন্য। আপাতত কিমের দেওয়া কুকুরের যত্ন কে করবে তা নিয়ে তরজা তুঙ্গে।