পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় বাড়তে থাকা রাজনৈতিক সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল ইউরোপীয় ইউনিয়ন । সম্প্রতি বলকান দেশটির সার্ব অধ্যুষিত অংশ রিপালবিকা সার্পস্কা দেশের সব জাতীয় প্রতিষ্ঠান বয়কটের ডাক দিয়েছে এবং বসনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আলাদা রাষ্ট্র গঠনের কথা বলছে । কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন এদিন জানাল তারা এটি কিছুতেই মেনে নেবে না । ইইউয়ের বিদেশনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল বলেন ইইউ ও আমেরিকা বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনার বিভাজন মেনে নেবে না ।
জার্মানিতে আয়োজিত মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে বোরেল বলেন এর আগে কখনই বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনায় এরকম উদ্বেগজনক পরিস্থিতি দেখা যায়নি । তিনি জানান এ বিষয়ে তিনি কয়েক মাস ধরে মার্কিন বিদেশমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে কথা বলছেন এবং আমেরিকা ইতিমধ্যেই বসনিয়ার নেতাদের সতর্ক করেছে । বোরেল সোজা সাপ্টা ভাষায় জানিয়ে দেন – আমরা বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনার বিভাজন ও বিভেদ মেনে নেব না । এ নিয়ে বসনিয়ার সার্ব পক্ষের (রিপাবলিকা সার্পস্কা) প্রেসিডেন্ট মিলোরাদ দোদিক সঙ্গে কথা বলেছেন বোরেল ।
বোরেল দোদিক সাধারণ জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলির নিয়ম ও নীতি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন । ইইউয়ের বোরেল আরও বলেন দেশের সাংবিধানিক ও নির্বাচনী পদ্ধতিতে সংস্কারের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে আহ্বান জানিয়ে আসছে তাতে সার্ব বসনীয় ও ক্রোট নেতাদের একমত হওয়া ’অত্যন্ত প্রয়োজনীয় । জানা গেছে বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশমন্ত্রীরা বসনিয়ার সার্ব এলাকা রিপাবলিকা সার্পস্কার নেতাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারেন তবে এসবই হবে বিস্তারিত আলোচনার পর । উল্লেখ্য ১৯৯৫ সালে ডেইটন শান্তি চুক্তির মাধ্যমে বসনীয় যুদ্ধের অবসান ঘটে ।
নতুন ব্যবস্থায় এক দেশ হলেও তা দু’টি সত্ত্বায় ভাগ হয়ে যায় । একটি হল রিপাবলিকা সার্পস্কা ও অপরটি হল ক্রোট ও বসনীয়দের বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনা । কিন্তু যুদ্ধের এতগুলো বছর পর দেশটি ফের একটি রাজনৈতিক সংকটে প্রবেশ করতে চলেছে । বিগত জুলাইয়ে সার্ব নেতারা দেশের সমস্ত সরকারি প্রতিষ্ঠান বয়কটের ডাক দেয় । এর কারণ হিসাবে তারা একটি নতুন আইনের কথা বলে ।
বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনার সেই আইনে গণহত্যাকে অস্বীকার ও যুদ্ধাপরাধীদের প্রশংসা করা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল । বিগত অক্টোবরে সার্ব নেতা মিলোরাদ দোদিক সার্বভৌম দেশ গঠনের জন্য বসনিয়ার মূল ফেডারেল ব্যবস্থা ত্যাগ করার ঘোষনা করলে রাজনৈতিক সংকট তীব্র হয়ে ওঠে ।
এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী সার্ব আইন প্রণেতারা রিপাবলিকা সার্পস্কার জন্য একটি স্বাধীন উচ্চ বিচার বিভাগীয় কাউন্সিল গঠনের পক্ষে ভোট দেন । ইইউ বিদেশ বিষয়ক ও নিরাপত্তা নীতির মুখপাত্র এ বিষয়ে বলেছেন এই পদক্ষেপটি বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার সাংবিধানিক ও আইনি আদেশের লঙ্ঘন ।