পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: নয়া সংসদে পাশ হয়েছে মহিলা সংরক্ষণ বিল। আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল এই বিল পেশ করেন। এই বিলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘নারী শক্তি বন্দন’। বিল পাশ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘মহিলা সংরক্ষণ বিল আগেও পেশ করা হয়েছে। কিন্তু পাশ করানো হয়নি। ভগবান হয়তো এটা করার জন্য আমায় বেছে নিয়েছেন।’ মা-বোনেদের আশ্বস্ত করে এই বিলকে আইনে পরিণত করার জন্য বিজেপি সরকার যে সংকল্পবদ্ধ সেই কথার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে দেশজুড়ে রাজনৈতিক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। বুধবার একই প্রসঙ্গ নিয়ে সংসদে সরব হলেন বারাসতের তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার। কাকলি এদিন বলেন, মমতার মতো ৪০ শতাংশ মহিলা সংরক্ষণ আগে করে দেখান। কাকলি এদিন প্রশ্ন তোলেন, ২০১৪ সালে মহিলা সংরক্ষণ বিল আনা হল না কেন? কেন লোকসভা ভোটের আগেই এই বিল পাশ করানো হল। এদিন সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার সংরক্ষণের সীমা ৩৩ থেকে ৪০ শতাংশ বাড়ানোর দাবিও তোলেন। কাকলি ঘোষদস্তিদার বলেন, ভোটের আগে এই বিল পাশ করানো রাজনৈতিক গিমিক ছাড়া আর কিছুই নয়। সাংসদ এদিন জোর গলায় বলেন, ১৬টি রাজ্যে ক্ষমতায় থাকলেও কোথাও বিজেপির মহিলা মুখ্যমন্ত্রী নেই। কিন্তু বাংলায় স্বাস্থ্য থেকে নারী কল্যাণ ও শিল্প, দফতরগুলি আছে মহিলাদের হাতেই। সব থেকে বাংলার মহিলারাই সুরক্ষিত বলে দাবি করেন সাংসদ।
সম্প্রতি কুস্তিগির ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে মহিলা কুস্তিগিরদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ প্রসঙ্গে ব্রিজভূষণের প্রসঙ্গ টেনে এনে কাকলি বলেন, মহিলা কুস্তিগিরদের সম্মানহনির অভিযোগের এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কিভাবে একজন এই ধরনের অভিযুক্ত সাংসদে বসে থাকতে পারেন।
একই সঙ্গে কাকলি বলেন, ইসরোর মহিলা বিজ্ঞানীরা বেতন পাচ্ছেন না কেন? কাকলির এই দাবি উড়িয়ে দিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজজু জানান, ইসরোর মহিলা বিজ্ঞানীরা নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন না, এই অভিযোগ সত্য নয়। ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্যে মহিলাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থার পাশাপাশি গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্যখাতে অতিরিক্ত বরাদ্দের দাবি জানান কাকলি দস্তিদার। বারাসতের সাংসদ, তাঁর বক্তব্যে উন্নাও হাথরাস প্রসঙ্গও তোলেন। তিনি বলেন, ‘সরকারের উচিত, আগে মহিলাদের সম্মান প্রদান করা। তার পর বিল আনা।’ কাকলি বলেন, মহিলা সংরক্ষণ বিল যেন শুধু চমক না হয়ে থেকে যায়, তৃণমূল চায় এই বিলের মাধ্যমে মহিলাদের প্রকৃত সম্মান দেওয়া হোক।
বুধবার লোকসভায় নারীশক্তি বন্ধন অধিনিয়মের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে, এইভাবেই সরব হন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। কাকলি জানান, ১৯৯৬ সালে প্রথম যখন এই বিলের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল, সেই সময় থেকেই এই বিলকে সমর্থন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেবগৌড়া সরকার সেই সময় বিলটি বিবেচনার জন্য সিপিআই সাংসদ গীতা মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এক সংসদীয় প্যানেলে পাঠিয়েছিল। সেই, সংসদীয় কমিটির সদস্য ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সংসদে এদিন উপস্থিত ছিলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।