মোল্লা জসিমউদ্দিন: বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে সন্দেশখালি এলাকার পুরাতন তিন খুনের মামলায় শুনানি চলে। এই তিন খুনের ঘটনায় শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছিল। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের বেঞ্চে পুরনো সেই মামলার শুনানি চলে। সেই মামলায় হলফনামা দেওয়ার জন্য সময় চাইল রাজ্য। আগামী ১৯ মার্চ পরবর্তী শুনানি রয়েছে। বিচারপতি এদিন নির্দেশজারি করে জানিয়েছেন, ‘খুনের অভিযোগে মামলায় নিম্ন আদালতের সমস্ত বিচার আপাতত স্থগিত।আগামী শুনানিতে এই সংক্রান্ত সব মামলার কেস ডায়েরি পুলিশকে হাজির করতে হবে আদালতে’। এদিনের শুনানিতে নিহতদের পরিবারের পক্ষে আইনজীবী মামলার বিষয় উল্লেখ করা হয়। তাতে শেখ শাহজাহানের নাম উঠে আসে।
মামলাকারী আইনজীবী আদালতে সওয়াল করেন, ‘তিনটি খুনের অভিযোগে এফআইআর-এ প্রথমে নাম থাকলেও, পরবর্তীতে শাহজাহানের নাম অজানা কারণেই বাদ দিয়ে দেওয়া হয়’। ঘটনাটি গত ২০১৯ সালের। পদ্মা মণ্ডল নামে সন্দেশখালির এক মহিলা অভিযোগ করেন, ‘তাঁর স্বামী প্রদীপ মণ্ডলকে খুন করেছিল শেখ শাহজাহানের দল’। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে হাটগাছি অঞ্চলের ৫৬ নম্বর বুথে বিজেপি জয়ী হয়েছিল। তারপরই ভোটগণনার এক সপ্তাহের মধ্যেই তাঁর বাড়িতে শাহজাহানের লেঠেল বাহিনী হামলা চালিয়েছিল বলে অভিযোগ। বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে চোখের মণিতে গুলি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। প্রদীপকে তলোয়ার ও ভোজালি দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে খুন করা হয় বলে অভিযোগ করেন স্ত্রী। এরপর থেকে দীর্ঘদিন তিনি তাঁর সন্তানকে নিয়ে প্রাণভয়ে ভয়ে এলাকাছাড়া ছিলেন। ওই মামলায় এফআইআর দায়ের করেছিলেন। তাতে প্রথমেই নাম ছিল শেখ শাহজাহানের। অভিযোগ, এফআইআর-এর প্রথমে নাম থাকলেই শাহজাহানের নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। ওই বছরই সন্দেশখালির হাটগাছি অঞ্চলের আরও দুজনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। পরে নদীর ধার থেকে এক জনের হাড়গোড় উদ্ধার হয়। ডিএনএ টেস্ট করে দেখা যায় নিখোঁজ ব্যক্তিরই কঙ্গাল সেগুলি। সেক্ষেত্রে শাহজাহান মূল অভিযুক্ত। কিন্তু এফআইআর থেকে নাম বাদ চলে যায়। এই মামলায় এদিন বিচারপতি বলেন, “যার নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ, তিনিই তো এখন সিবিআই গারদে। সব পক্ষের হলফনামা শোনার পর অর্ডার দেব।” আগামী ১৯ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।