পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেন। চারদিকে বারুদের গন্ধ। ইতিমধ্যেই দেশ ছেড়ে ইতিমধ্যে চলে গিয়েছে প্রায় লাখের ওপরে মানুষ।
শুক্রবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটদানে বিরত থাকল ভারত, চিন, এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। ভোটদান থেকে বিরত থাকা প্রসঙ্গে ভারতের বক্তব্য, সংঘাতের প্রতি নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখার জন্যই এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গেছে।
ইউক্রেন থেকে সম্পূর্ণ এবং নিঃশর্ত রাশিয়ান বাহিনী প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে এই প্রস্তাবে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে খসড়া প্রস্তাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আলবেনিয়া, অস্ট্রেলিয়া, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, জর্জিয়া, পোল্যান্ড, রোমানিয়াসহ ১১টি দেশ সমর্থন জানিয়েছে। কিন্তু রাশিয়া ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য। তাই রাশিয়ার ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। রাশিয়ার সেই অধিকারই প্রয়োগ করেছে। রেজোলিউশন ব্যর্থ হয়েছে।
অন্যদিকে ভোট না দেওয়া প্রসঙ্গে ভারত এর কারণ ব্যাখ্যা করে জানিয়েছে, সমস্ত সদস্য রাষ্ট্রকে অবশ্যই মনবিরোধ ও বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আলোচনার ওপর ভরসা রাখতে হবে। কিন্তু ভারত ভোট দেয়নি তার কারণ হিসেবে ভারত জানিয়েছে, এটি রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ‘মার্কিন-স্পনসর্ড রেজুলেশন’। তাই ভোট দান থেকে বিরত ছিল।
তবে যুদ্ধ থামানোর বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। রাশিয়াকে ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে UNSC রেজোলিউশন বৈঠকে, ইউক্রেনে আটকা পড়া ভারতীয়দের জন্য সেখানে উদ্ভুত গুরুতর পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে, জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টিএস তিরুমূর্তি বলেন, “ইউক্রেনের সাম্প্রতিক ঘটনাবলির কারণে ভারত গভীরভাবে বিরক্ত। আমরা আহ্বান জানাই যে হিংসা এবং শত্রুতা অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য সমস্ত প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হবে। মানুষের জীবনের মূল্য দিয়ে কোনও সমাধান কখনই আসতে পারে না।”
তবে ভারত এই বৈঠকে জানিয়েছে, “আমরা ইউক্রেনে বিপুল সংখ্যক ভারতীয় ছাত্র সহ ভারতীয় সম্প্রদায়ের কল্যাণ ও নিরাপত্তা নিয়েও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। সমসাময়িক বিশ্বের শৃঙ্খলা জাতিসংঘের সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং রাষ্ট্রগুলির সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধার উপর নির্মিত হয়েছে।” তারা আরও বলেন, “সমস্ত সদস্য রাষ্ট্রকে একটি গঠনমূলক পথ খুঁজে বের করার জন্য এই নীতিগুলিকে সম্মান করতে হবে। আলোচনাই পার্থক্য এবং বিরোধ নিষ্পত্তির একমাত্র উত্তর, সময় যতই ভয়ঙ্কর হোক।”
রাশিয়া ভেটো দেওয়ার পর মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেছেন, নিরাপত্তা পরিষদের এক বেপরোয়া, দায়িত্বজ্ঞানহীন স্থায়ী সদস্য তার প্রতিবেশীকে আক্রমণ করতে এবং জাতিসংঘ ও আমাদের আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে ক্ষমতার অপব্যবহার করলেও আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে ইউক্রেন ও তার জনগণের পাশে রয়েছি।
নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো ক্ষমতা থাকা পাঁচ সদস্য হচ্ছে রাশিয়া, চিন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। এ পাঁচটি সদস্যের একজনও কোনো প্রস্তাবে ভেটো দিলে সে প্রস্তাব পাস হয় না।
শুক্রবার রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে আনা আমেরিকা ও আলবেনিয়ার প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে বিভিন্ন দেশ। তবে রাশিয়া ১৫ সদস্যের শক্তিশালী নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য। পুতিনের দেশ রাস্ট্রসংঘের মঞ্চে তার ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করেছে। সেই কারণেই প্রস্তাবটি পাশ হয়নি।