পূবের কলম ওয়েব ডেস্ক : ইডেনে প্রথম টি ২০ ম্যাচে জয় পেল ভারত। মিডল অর্ডারের দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটার সূর্যকুমার যাদব ও ভেঙ্কাটেশ আইয়ারের অনবদ্য জুটির ব্যাটে ভর করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৬ উইকেটে হারিয়ে দিল ভারত। আর এতে তিন ম্যাচের কুড়ি বিশের সিরিজে এগিয়ে গেল রোহিত শর্মার টিম ইন্ডিয়া।
একে তো পিচে হালকা ঘাস, তার ওপর রাত যত বাড়বে ’ডিউ ফ্যাক্টর’ সমস্যায় ফেলবে ফিল্ডিং করা দলকে। সব জেনে বুঝেও টসে জিতে ফাঁকা ইডেনে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। আসলে চলতি বছরে অক্টোবর নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার গ্রিনটপে আয়োজিত হতে চলা টি ২০ বিশ্বকাপকে মাথায় রেখে এমন চ্যালেঞ্জিং সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। তবে শুরুতে বোলিং করার সুবিধে তুলে নিতে ভুল করেননি ভুবনেশ্বর কুমার। শুরুর ওভারের পঞ্চম বলে ওপেনার ব্রেন্ডন কিংকে (৪) রানে সাজ ঘরে ফিরিয়ে ক্যারিবিয়ানদের প্রথম ধাক্কাটা দিলেন ভুবি। তবে ম্যাচে বল হাতে অনেকবেশি কার্যকরি ভূমিকা পালন করেন ইডেনে টি ২০তে অভিষেক হওয়া লেগ স্পিনার রবি বিষনোই।
এ ম্যাচে দলে জায়গা হয়নি নাইট অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ারের। মুহাম্মদ সিরাজ, আভেস খানের মতো স্পিডস্টাররা থাকলেন দলের বাইরে। সেখানে ভুবনেশ্বর কুমার, দীপক চাহার ও হর্ষল প্যাটেলের মতো জোরে বোলারের ওপর ভরসা রাখলেন রোহিত। শুরুতে ভুবি দলকে একটা উইকেট এনে দিয়েছেন। একটি উইকেট পেয়েছেন দীপক চাহার। হর্ষল প্যাটেল পান দুটি উইকেট। তবে সব মিলিয়ে জোরে বোলাররা ম্যাচে সেভাবে দলকে ভরসা দিতে পারেননি। ম্যাচের শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ উইকেট হারালেও, রানের গতি সমান তালে বজায় রাখেন তাদের ব্যাটাররা। বিশেষ করে নিকোলাস পুরান। ম্যাচের চতুর্থ ওভারে লম্বা ছক্কা হাঁকালেন তিনি। মায়ের্সের ক্যাচ বিষনোই ধরলেও, তার পা বাউন্ডারি লাইনে থাকায় সেটা ছক্কা হয়ে যায়। তবে মায়ের্সের ইনিংস লম্বা হতে দেননি চাহাল। ২৪ বলে ৩১ রান করা মায়ের্সকে আউট করেন তিনি। এর ফলে ভারতের স্পিন জালে ক্রমে হাঁসফাঁস অবস্থা হয়ে দাঁড়ায় ক্যারিবিয়ান ব্যাটারদের।
আন্তর্জাতিক টি ২০ ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া রবি বিষনোই কিন্তু কাঁপুনি ধরিয়ে দিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটারদের।১১ তম ওভারে ওয়াইড বলে শুরু করলেও, সে ওভারে জোড়া উইকেট তুলে নেন তিনি। প্রথমে আউট করেন রোস্টন চেজকে (৪)। এর পর ওভারের পঞ্চম বলে তার শিকার হন পাওয়েল (২)। মধ্যিখানে চাহারের বলে তার হাতে ক্যাচ দিয়ে ১০ রান করে ফেরেন আকিল হোসেন। আইপিএল ১০.৭৫ কোটিতে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিক্রি হওয়া পুরান ৩৮ বল (৫৩ রান) হাফ সেঞ্চুরি করেন। এরপর লং অফে দাঁড়িয়ে থাকা কোহলির হাতে ক্যাচ তুলে হর্ষলের শিকার হন ৪৩ বলে ৬১ রান করা পুরান। ইনিংসের শেষ বলে রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়ে ওডিয়েন স্মিথ ৪ রানে আউট হলেও, ক্রিজের অন্য প্রান্তে উইকেট আঁকড়ে পড়ে থাকলেন অধিনায়ক পোলার্ড। তার গুরুত্বপূর্ণ ২৪ রানের সুবাদে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর বোর্ডে ১৫৭ রান জমা পড়ে।
১৫৮ রানের জয়ে লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে মাঠে নেমে আবারও ব্যাট হাতে ভয়ঙ্কর রূপে ধরা দিলেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। পয়া ইডেনে আবারও ব্যাটে ঝড় তুললেন তিনি। ওপেনিংয়ে ইশান কিশানকে সঙ্গী করে খেললেন একের পর এক বড় শট। স্কোর বোর্ডে ঝড় তুলে ১৯ বলে ঝোড়ো ৪০ রানের ইনিংস খেলেন রোহিত। তবে তিনি চেজের বলে বাউন্ডারি লাইনে স্মিথের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে গেলেন। ক্রিজে তখনই আবির্ভাব ঘটে কিং কোহলির। সিএবির অনুরোধে বোর্ড সভাপতি সৌরভ ইডেনের আপার টিয়ারে যে ২ হাজার দর্শকের খেলা দেখার অনুমতি দিয়েছিলেন, কোহলি মাঠে নামতে তাদের গর্জনে কেঁপে ওঠে গোটা ইডেন।
এর মাঝে সেই চেজের বলে ৩৫ রান করে ফেরেন ইশান। এদিনও কোহলির ব্যাট থেকে লম্বা কোনও ইনিংস এলো না। তুলে খেলতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ১৭ রানে পোলার্ডের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কোহলি। দলকে টানতে ব্যর্থ হলেন ঋষভ পন্থও (৮)। যদিও দলকে হতাশ করলেন না সূর্যকুমার যাদব ও ভেঙ্কাটেশ আইয়ার জুটি। পাহাড়প্রমাণ চাপের মধ্যে সূর্যকুমারের ৩৫ ও ভেঙ্কাটেশের ২০ রানের ইনিংসে ওপর ভর করে প্রথম টি ২০ তে ৬ উইকেটে জয় পেল ভারত।