ইনামুল হক, বসিরহাট: ঘূর্ণিঝড় রেমাল আছড়ে পড়ার আগেই আতঙ্ক সুন্দরবনের উপকূলবর্তী অঞ্চলের মানুষের মধ্যে। চিন্তায় মাথায় হাত সুন্দরবন এলাকার মানুষের। ভেঙে যেতে পারে একাধিক নদী বাঁধ। প্রশাসন আগেভাগেই সতর্ক হয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রতিটা ব্লকে জাতীয় মুকাবালা বিপর্যয় টিম ও রাজ্য মোকাবেলা বিপর্যয় টিম প্রস্তুত রয়েছে। ইতিমধ্যে ১২ টা জাতীয় মোকাবেলা দল প্রস্তুত রয়েছে সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ এলাকায়। বাড়তি নজর রয়েছে সেচ, বিদ্যুৎ ও স্বাস্থ্য দপ্তরের। ৫০ হাজার পানীয় জলের প্যাকেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিবারে শুকনো খাবারের প্যাকেট মজুদ করা হয়েছ। ইতিমধ্যে দুর্বল নদী বাঁধ এলাকা গুলি থেকে নিকটবর্তী স্কুল বাড়ি ও ত্রাণ শিবিরে কিছু মানুষকে সরানো হয়েছে। মানুষকে সতর্ক করার জন্য সুন্দরবনের উপকূলবর্তী এলাকার মাইকিং প্রচার করছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। প্রশাসনের তরফ থেকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার জন্য সব রকম প্রস্তুতি সেরে ফেলা হয়েছে বলেছেন হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও। তবুও মানুষের আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না রাত বাড়লে কি হবে কোথায় যাব কোথায় থাকবো তাড়া করে বেড়াচ্ছে সেই মানুষগুলোকে। হাসনাবাদ হিঙ্গলগঞ্জ এর বিস্তীর্ণ এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় জায়গায় চলছে এনডিআরএফ এর পক্ষ থেকে মাইকিং প্রচার। সকাল থেকে বেশি কিছু জায়গায় শুরু হয়েছে হালকা ঝিরঝির বৃষ্টি। পাশাপাশি বইছে ঝড়ো হাওয়া আমফান, ইয়াসের দগদগে খত থেকে শিক্ষা নিয়ে সুন্দরবন অঞ্চলের মানুষ আতঙ্কে প্রহর গুনছে। বসিরহাট মহাকুমার হিঙ্গলগঞ্জ বিধানসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখলেন হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মন্ডল। কথা বললেন সাধারণ মানুষদের সাথে। ফেরিচলা চলের উপর নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে মৎস্য জীবীদের নদীতে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। পাশাপাশি নদী বাঁধ পরিদর্শন করে বিধায়ক স্বয়ং নিজেই। বসিরহাটের হিঙ্গলগঞ্জে দুই সদ্যোজাত শিশুকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন দুই মহিলা। তারা আটকে পড়ে ঝড়ের মধ্যে। হিঙ্গলগঞ্জের লেবুখালী ফেরিঘাটে। যেহেতু ফেরিঘাট পরিষেবা ঝড়ের প্রভাবে বন্ধ তাই তারা বাড়ি ফিরতে পারছিল না। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পর সিভিল ডিফেন্স এর কর্মীরা এসে তাদেরকে নিরাপদ স্থানে পাশের একটি পাকা বাড়ির নিচে নিয়ে যায়। হাসনাবাদের বরুনহাটে গ্রামের সীমান্তবর্তী এলাকায় ইছামতি নদীর বাঁধের বেশ খানিকটা অংশ বিপদজনক অবস্থা। হাসনাবাদেরর আংনারা গ্রামের ১৪ নম্বর বুথ এলাকায় নদী বাঁধ ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হওয়ায় আগেভাগেই স্থানীয় যুবকরা পলিথিন, বাঁশ, মাটির বস্তা দিয়ে নদী বাঁধ মেরামতিতে নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।জোয়ারের জল বেড়ে যাওয়ায়, প্রবল ঢেউয়ের পাশাপাশি নদীর বাঁধ বেশ কয়েক ফুট বসে যায়। জোর কদমে মেরামতির কাজ চলছে। দক্ষিণ বরুনহাট, রাজবংশী পূর্বপাড়া মায়ের বাড়ির কাছে ইছামতি নদীর বাঁধ বিপদজনক অবস্থা বেশ কয়েক ফুট বসে যায়। জোয়ারে জলে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় সেচ দপ্তর তৎপরতায় কাজ শুরু করেছে কিছু শ্রমিক নিয়ে। সন্দেশখালির বিভিন্ন এলাকা রায়মঙ্গল, কালিন্দী, বড় কলাগাছি,ছোট কলাগাছি সহ একাধিক জায়গায় নদী বাধের অবস্থা বিপজ্জনক। প্রশাসনের পক্ষ থেকে চলছে নজরদারদারী। সকাল থেকে হালকা থেকে মাজারে বৃষ্টি সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া, বেলা যত বাড়ছে হাওয়ার গতিবেগ ও বৃষ্টি তত বাড়ছে। ইতিমধ্যে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল, ঠিক তার আগে হিঙ্গলগঞ্জ, দক্ষিণ বোলতলা এলাকায় ২০ থেকে ২৫ ফুট নদী বাঁধ ভেঙ্গে জল ঢুকতে শুরু করে গ্রামে। আতঙ্কে গ্রামের মানুষ, তড়িঘড়ি স্থানীয় বাসিন্দারা সেই বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করে। নিজেরাই, পাশাপাশি প্রশাসনকে খবর দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।