পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার ঘেরাটোপে রাজধানী। দিল্লির লাল কেল্লায় অনুষ্ঠানের দিন প্রায় সাত হাজার অতিথি সমাগম হতে পারে বলে, দাবি প্রশাসনের।
এবছর ৭৫ বছর পূরণ করছে স্বাধীনতা দিবস। লাল কেল্লায় প্রতি বছরের মতো এবছরেও ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
শনিবার প্রশাসনের কর্ম কর্তারা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী যে নির্দিষ্ট জায়গাটি থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন সেই স্থলটি কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে বন্দি। প্রবেশ পথেই রয়েছে ফেসিয়াল রিকগনিশন সিস্টেম ক্যামেরা (এফআরএস)। গোটা চত্বরকে বহু স্তরীয় নিরাপত্তায় মুড়ে রাখা হয়েছে। সোমবার স্বাধীনতা দিবসের দিন মনুমেন্ট চত্বরে ১০ হাজার পুলিশ কর্মী মোতায়েন থাকবে। লাল কেল্লার নিকটবর্তী স্থলের উঁচু ভবনগুলিতে ৪০০ ‘কাইট ক্যাচার’ মোতায়েন রয়েছে।
সেখান থেকে স্পর্শকাতর অঞ্চল ও উপর দিয়ে উড়ে আসা কোনও সন্দেহভাজন বস্তুর ওপরে নজরদারি চালানো হবে। লাল কেল্লার চারপাশের পাঁচ কিলোমিটার এলাকাকে “নো কাইট ফ্লাইং জোন” হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মূল অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া এই নির্দেশিকা জারি থাকবে।
পুলিশের কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থার অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেমও মোতায়েন থাকবে। লাল কেল্লা ও তার আশেপাশে নজরদারিতে থাকছে উচ্চ রেজ্যুলেশন সম্পন্ন ক্যামেরা। লাল কেল্লা সহ গোটা অঞ্চলেই সকলের গতিবিধির ওপরে নজরদারি চালাবে এই ক্যামেরা।
সিনিয়র পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, মুঘল আমলের স্মৃতিস্তম্ভের প্রবেশপথে এফআরএস ক্যামেরাও মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া টিফিন বক্স, জলের বোতল, রিমোট কনট্ট্রোলড চালিত গাড়ি, সিগারেট লাইটার, ব্রিফ কেস, হাত ব্যাগ, দূরবীণ, ছাতা সহ অনুরূপ জিনিসপত্র নিয়ে লাল কেল্লায় প্রবেশের অনুমতি নেই।
স্পেশাল পুলিশ কমিশনার (আইন-শৃঙ্খলা) দেবেন্দ্র পাঠক জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই দিল্লিজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। লাল কেল্লা চত্বরে ১৩ থেকে ১৫ আগস্ট, অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঘুড়ি, বেলুন, চাইনিজ লন্ঠন ওড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। নিষেধ অমান্য করলেই কঠিন শাস্তির মুখে পড়তে হবে। এই বিষয়ে নজরদারি চালানোর জন্য কাইট ক্যাচার মোতায়েন থাকছে। ওই চত্বরে এই ধরনের কিছু উড়তে দেখলেই তাদের বাধা দেবে কাইট ক্যাচার। সর্বত্র নজরদারিতে র্যা ডার মোতায়েন থাকছে।
দেবেন্দ্র পাঠক আরও জানিয়েছেন, বহুস্তরীয় নিরাপত্তার মোড়কে গোটা দিল্লি। শুক্রবার দিল্লি পুলিশ আনন্দ বিহারের আন্তঃরাজ্য বাস টার্মিনালের কাছ থেকে ২২০০টির বেশি তাজা কার্তুজ সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। কোথাও বিস্ফোরক লুকিয়ে রাখা হয়েছে কিনা সে ব্যাপারেও পুলিশের প্রশিক্ষিত বিশেষ দল সর্বত্র নজর চালাচ্ছে। এছাড়াও একহাজারটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ক্যামেরা মোতায়েন করা হয়েছে দিল্লি উত্তর, মধ্য জেলা ইউনিটগুলিতে। এই ক্যামেরাগুলি বিশেষ অতিথি অভ্যাগতদের আসা-যাওয়ার পথটি নজরে রাখবে। দিল্লিজুড়ে পুলিশের টহলদারি আরও জোরদার করা হয়েছে। হোটেল, গেস্ট হাউস, রেস্তরাঁ, পার্কিং জোন সর্বত্র কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। ভাড়াটে ও পরিচারকদের পরিচয় পত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ১২ জন আইপিএসকে বিশেষ সন্মাননা দেবে রাজ্য
গত ২২ জুলাই দিল্লি পুলিশ রাজ্যবাসীকে একটি নির্দেশিকা দিয়ে জানিয়ে দেয় ১৬ আগস্ট পর্যন্ত রাজধানীর আকাশে প্যারাশ্যুট, হ্যাং গ্লাইডার, বায়বীয় বেলুন ওড়ানো বন্ধ থাকবে।