দেবশ্রী মজুমদার, বীরভূম,এবার লাইনে ভিড়ের মধ্যে দাঁড়ানোর দিন শেষ। রেশন দুয়ারে। হোম সার্ভিস। রাজ্যে কোভিড সঙ্ক্রমণ বৃদ্ধি পেতেই রাজ্যবাসীর জন্য রেশন সামগ্রী বিনামূল্যে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিনামূল্যের রেশন পরিষেবা এখনো চলছে। নির্বাচনের আগে ঘোষণা করেছিলেন এবার থেকে রেশন পৌঁছে দেওয়া হবে বাড়ি বাড়ি। তৃতীয়বারের জন্য সরকারে এসে ঘোষণা মত সেই কাজ শুরু করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
তৃতীয়বার সরকারে আসার পর ভোটের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি মতো দুয়ারে রেশন প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করার জন্য মাঠে নেমে পড়ে সরকার। দীর্ঘ আলোচনা, পর্যালোচনা এবং পর্যবেক্ষণের পর বুধবার থেকে পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে রাজ্যের অন্যান্য জায়গায় পাশাপাশি বীরভূমে চালু হল দুয়ারে রেশন প্রকল্প।
সকাল থেকেই প্রবল বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করলেন রেশন ডিলাররা। এই পরিষেবা পেয়ে স্বভাবতই খুশি সকলে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূমে মোট ৯৬৩ জন রেশন ডিলার রয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৪৫ জন রেশন ডিলারকে এই পাইলট প্রজেক্টের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। তারা বুধবার থেকেই পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে ক্যাম্প করে এই দুয়ারে রেশন দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন।
দুয়ারে রেশন প্রকল্পের পাইলট প্রজেক্টে বুধবার রামপুরহাট এক ব্লকের নটি অঞ্চল, দুই ব্লকের সাতটি অঞ্চল, নলহাটি দুই ব্লকের তিনটি পঞ্চায়েতের পাঁচ জায়গাই, নলহাটি এক ব্লকের পুরসভা এলাকা এবং মুরারই এক ব্লকের ভাদিশ্বর সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় দুয়ারে রেশন পরিষেবা দেওয়া হয়। মল্লারপুরেও একইভাবে পরিষেবা পান মানুষ। নলহাটি দুই ব্লকে বিডিও হুমায়ুন চৌধুরী ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সেলিমা খাতুন সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। বোলপুর পৌর এলাকার ১০ এবং ১৭ ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশন পৌঁছে দেবার কাজ শুরু হয়।
বোলপুরে এই প্রকল্পের সূচনা করেন বোলপুর পৌরসভার পৌর প্রশাসক মন্ডলীর চেয়ারপার্সন পর্ণা ঘোষ।
এদিন এই প্রকল্পের সূচনা হিসেবে যে সব রেশন ডিলারদের এই প্রোজেক্টের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে, তারা তাদের গাড়িতে করে রেশন সামগ্রী নিয়ে নির্দিষ্ট এলাকায় পৌঁছে যান। সেখানে উপভোক্তারা লাইন দিয়ে ই-পস মেশিনে বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের মাধ্যমে নিজেদের প্রাপ্য রেশন সামগ্রী সংগ্রহ করেন। নতুন এই প্রজেক্ট নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। এই পরিষেবা পেয়ে স্বভাবতই খুশি এলাকাবাসীরা।
অনেকেই জানান তারা কখনো ভাবতেই পারেননি যে এই ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া ও বাস্তবায়ন সম্ভব হতে পারে। অনেকের বয়স হয়েছে তাই রেশন দোকানে লাইন দিয়ে রেশন নেওয়া তাদের কাছে খুব কষ্টের। তাই বাড়িতে বসে রেশন পেয়ে রীতিমতো আপ্লুত তারা।
বোলপুর পৌরসভার পৌর প্রশাসক মন্ডলের চেয়ারপারসন পর্ণা ঘোষ জানান, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ এবং নিয়মমতো প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশনের সামগ্রী সঠিক মাত্রায় পৌঁছে দিতে হবে। গ্রাহক তিনি তার বাড়ির দরজা থেকে রেশন সামগ্রী নেবেন। তবে কেরোসিন তেল টা রেশন দোকান থেকে নিতে হবে। আমরা রেশন ডিলারকে সমস্ত রকম সহযোগিতা করবার জন্য তৈরি আছি।