পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইন্তেকাল করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম রাইসি (ইন্না লিল্লাহি…)। এদিনের ঘটনায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন ইরানের বিদেশ মন্ত্রী হুসেন আমীর আবদুল্লাহিয়ানও। ১৯ মে রবিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। জানা গেছে, ইব্রাহিম রাইসি আজারবাইজান সীমান্তে একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে গিয়ে সেখান থেকে ফিরছিলেন। তখনই দুর্ঘটনাটি ঘটে। তবে এই প্রথম নয়, অতীতেও বহু তাবড় তাবড় নেতার প্লেন ক্র্যাশে মৃত্যুর মুখে পতিত হয়েছে। এক নজরে তাঁদের তালিকা
*জাতিসংঘের মহাসচিবের মৃত্যু: জাতিসংঘের প্রাক্তন মহাসচিব দগ হামারহোল্ড ১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৬১ সালে বিমান দুর্ঘটনায় প্রয়াত হন। জানা গেছে, জাম্বিয়ার কাছে বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। উক্ত ঘটনায় আরও ১৬ জন নিহত হয়েছিলেন।
*পানামার প্রেসিডেন্ট ওমর তোরিজোস: পানামার প্রেসিডেন্ট ওমর তোরিজোসও বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। তিনি ১৯৮১ সালের ৩১ জুলাই মারা যান। তাঁর দেহ শনাক্ত করতে অনেক বেগ পেতে হয়েছিল উদ্ধারকর্মীদের। পানামার পেনোনোমের কাছে কোক্লেসিটোতে সেরো মার্টাতে বিধ্বস্ত হয় তাঁদের বিমান। বিমানটি রাডার থেকে হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে যায়।
*মুহাম্মদ জিয়া-উল-হক, পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি: জেনারেল মুহম্মদ জিয়া-উল-হক পাকিস্তানের ষষ্ঠ রাষ্ট্রপতি। ১৯৮৮ সালের ১৭ অগাস্ট মৃত্যু হয় তাঁর। C-130 হারকিউলিস বিমান বাহাওয়ালপুর থেকে ওড়ার কিছুক্ষণ পরেই ভেঙে পড়ে। তাঁর মৃত্যু নিয়েও আজ রয়েছে রহস্য। বিস্তর জলঘোলাও হয়েছিল সেই সময়।
*সেবাস্তিয়ান পিনেরা, চিলির প্রেসিডেন্ট: চিলির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিমেরার মৃত্যু হয় ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। তাঁর হেলিকপ্টার দক্ষিণ চিলির একটি হ্রদে ভেঙে পড়ে। ঘটনায় নিহত হন পিনেরা। পরপর দুইবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।
*চিনা কমিউনিস্ট পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লিন বিয়াও: ১৯৭১ সালে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লিন বিয়াও একটি বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন। কমিউনিস্ট পার্টির উত্থান এবং চিনে জাপানি ও জাতীয়তাবাদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় একজন প্রখ্যাত কমান্ডার ছিলেন লিন বিয়াও। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন লিন বিয়াওয়ের মৃত্যু সম্পর্কে বলেছিল, লিন তার সকল সামরিক কর্মকাণ্ডে জয়লাভ করলেও অন্য ধরনের একটি যুদ্ধ তাকে পরাজিত করেছিল। আর সেটা হলো কমিউনিস্ট পার্টির অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক যুদ্ধ। লিন ১৯৭১ সালে নিখোঁজ হন। চিনা সরকার তখন বলেছিল যে চেয়ারম্যান মাওকে হত্যার ব্যাপারে লিনের পরিকল্পনা ব্যর্থহওয়ার পরে মঙ্গোলিয়ায় একটি বিমান দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান। ফ্লাইটের সময় কী ঘটেছিল এবং কীভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছিল তা এখনো জানা যায়নি।
*মোজাম্বিকের প্রেসিডেন্ট সামোরা ম্যাচেল: মোজাম্বিকের রাষ্ট্রপতি সামোরা ম্যাচেল ১৯৮৬ সালের ১৯ অক্টোবর বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন। তিনি একটি সোভিয়েত তুপোলেভ টু-১৩৪ জেটলাইনারে ছিলেন। এ দুর্ঘটনায় ৩৪ জন মারা গেলেও ১০ জন বেঁচে যান। নিহতদের মধ্যে ম্যাচেলের সরকারের সিনিয়র সদস্যরাও ছিলেন। একটি তদন্তে দেখা গেছে, কম উচ্চতায় উড়ে যাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা উপেক্ষা করেছিলেন বিমানের ক্রুরা। সে সময় অবশ্য কিছু ষড়যন্ত্র তত্ত্ব দুর্ঘটনায় দক্ষিণ আফ্রিকার জড়িত থাকার দিকে ইঙ্গিত করেছিল। ফ্লাইটটি মোজাম্বিক থেকে জাম্বিয়ার দিকে যাওয়ার কথা থাকলেও এটি দক্ষিণ আফ্রিকায় বিধ্বস্ত হয়েছিল বলে ডালপালা মেলে এসব ষড়যন্ত্র তত্ত্ব।