পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক:
যুদ্ধ শুরুর আগে গাজার বাসিন্দা মাহমুদ আল-দাউদি (৩৩) কখনোই কল্পনা করতে পারেননি, তার দোকানে ধুলো পড়া রেডিও সেটগুলোর এত বেশি চাহিদা থাকবে। বাইরের বিশ্বের খবর রাখতে আবারও একটি মূল্যবান মাধ্যম হয়ে উঠবে! কারণ ডিজিটাল যুগের বাজারে এটি একেবারে বিলুপ্তির পথে। অনেক দেশে কালক্রমে হারিয়ে যাওয়া এ মাধ্যমের প্রচলন একেবারেই নেই। তবে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় নতুন করে আবার সেই রেডিওরই প্রত্যাবর্তন ঘটেছে। ইসরাইলি হামলার খবর শুনতে ঘরে ঘরে বাজছে রেডিও। বাড়ির উঠোনে বসে, দোকানে বসে, যে যেভাবে পারছেন শুনছেন যুদ্ধের বার্তা।
অক্টোবর শুরু হওয়া ইসরাইলি হামলা দিন দিন নৃশংস হয়ে উঠছে। গাজা ধ্বংসে সভ্যতাখেকো সব ভয়ংকর অস্ত্র-সরঞ্জাম ব্যবহার করছে সেনারা। অত্যাধুনিক বোমাসহ পলকে দিগন্ত ছুঁয়ে ফেলা ফাইটার জেট, অ্যান্টি মিসাইল ট্যাংক-কোনো কিছুই বাদ রাখছে না। আধুনিক বিশ্বের সর্বাধুনিক সব যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে গাজা। আক্রমণের সেসব খবর পেতেই হারানো দিনের সেই রেডিওকেই আবার ঘরে তুলেছেন বাসিন্দারা। ব্যাঙ্গাÍক সুরে বললে, আধুনিক বিশ্বের দাপটে রীতিমতো আদিম যুগে ফিরে গেছে যুদ্ধপীড়িত অসহায় গাজাবাসী। সরল কণ্ঠে ঠিক এই কথাটিই বলেছেন গাজার আরেক বাসিন্দা হাসুনা (৭৫)- ‘আধুনিক প্রযুক্তিতে বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি।’
হামলা শুরুর পর থেকেই গাজায় বিদ্যুৎ বিপর্যয় একটি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইসরাইল বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করার পর থেকে অবরুদ্ধ অঞ্চলের ২৩ লাখ মানুষ দীর্ঘ ব্ল্যাকআউট সহ্য করছে। বিধ্বস্ত শহরে টেলিভিশন অথবা কম্পিউটারের ব্যবহার একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ইন্টারনেট সংযোগও বন্ধ রাখছে ইসরাইল। অচল হয়ে পড়েছে মোবাইল যোগাযোগ। দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানত যে ইন্টারনেটের মাধ্যমে তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।